“সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রাথমিক ধারণা ”
———————————————————————————
“অক্টোবর সাইবার নিরাপত্তা মাস”
ই-প্রেস ক্লাব ডেস্কঃ ইন্টারনেট বা মোবাইল ফোনের আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অপরাধমূলক অভিপ্রায় নিয়ে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে শারীরিক বা মানসিক ক্ষতির উদ্দেশ্যে আইন বহির্ভূতভাবে সৃষ্ট অপরাধকে ‘সাইবার অপরাধ’ বলে।
যেমনঃ-হ্যাকিং, ব্যক্তির অনুমতি ব্যতীত তথ্যফাঁস, নারী নির্যাতন, ব্ল্যাকমেইল, অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারণা ইত্যাদি। দেশে সংঘটিত সাইবার অপরাধের আখড়া হয়ে উঠছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুক। কেননা ফেসবুক বা যেকোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর, বিভ্রান্তিমূলক, অশালীন, অরুচিকর, অশ্লীল, আক্রমণাত্মক ও উস্কানিমূলক কিছু লেখা বা মন্তব্য করা কিংবা ছবি বা ভিডিও আপলোড করা সাইবার অপরাধের অন্তর্ভুক্ত।বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রে প্রতিনিয়ত সংঘটিত হচ্ছে সাইবার ক্রাইম।
সাইবার অপরাধ প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকেঃ
(১)ব্যক্তি সংক্রান্ত সাইবার অপরাধঃ-
ব্যক্তি সংক্রান্ত সাইবার অপরাধের মধ্যে রয়েছে, সাইবার পর্নোগ্রাফি, সাইবার স্টকিং, সাইবার ডিফেমেশন ইত্যাদি। সাইবার স্টকিং বলতে বোঝায়, ‘কোনো ব্যক্তি যদি এক বা একাধিক প্রোফাইলের মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যক্তির কার্যকলাপ সামাজিক নেটমাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে তবে তা স্টকিংয়ের আওতায় পড়ে।
(২)সম্পত্তি সংক্রান্ত সাইবার অপরাধঃ-
সম্পত্তি সংক্রান্ত সাইবার অপরাধের মধ্যে রয়েছে অনলাইন জুয়া, ফিশিং, কপিরাইট লঙ্ঘন, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি ইত্যাদির মতো নানা ধরনের অপরাধ। ফিশিং (চযরংযরহম) হলো, ‘প্রতারণার মাধ্যমে কারো কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন ব্যবহারকারী নাম, পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করাকে বোঝায়।’
উল্লেখযোগ্য কিছু সাইবার অপরাধ হলোঃ-
অনলাইনে ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত করে মন্তব্য, কম্পিউটার অ্যাবিউজ, আইপি স্পুফিং, কম্পিউটার ভাইরাস, ইউটিউবে অন্তরঙ্গ ভিডিও ও ছবি আপলোড, ফেক আইডি তৈরি, পাসওয়ার্ড অনুমান করে আইডি হ্যাক ইত্যাদি। আইপি স্পুফিং বলতে বোঝায় ‘হ্যাকারের মাধ্যমে কোন বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অন্য কোনো কম্পিউটারে আইপি অ্যাড্রেস পাঠানো।’ সাইবার অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরেকটি পরিভাষা হলো সাইবার বুলিং। ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে হেয় প্রতিপন্ন করাকে ‘সাইবার বুলিং’ বলে। অর্থাৎ ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে কারো ব্যক্তিগত দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করা, ভয় দেখানো বা মানসিক নির্যাতন বা অন্যায় কোনো কিছুতে প্রলুব্ধ করা ইত্যাদি হলো সাইবার বুলিং। আবার একজনের ছবি বা ভিডিও বিকৃতি করে অনলাইনে তুলে ধরাও বুলিংয়ের মধ্যে পড়ে। সাইবার বুলিং স্বতন্ত্র কোন অপরাধ নয় বরং সাইবার অপরাধেরই একটি অংশ।
সাইবার নিরাপত্তা এবং সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ, তদন্ত ও বিচারের উদ্দেশ্যে ২০০৬ সালে প্রণয়ন করা হয় ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন’। অন্যদিকে একই উদ্দেশ্য ২০১৫ সালে প্রণয়ন করা হয় ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণীত হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের ১৪ ধারাতে উল্লেখ আছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য কোনো ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া তার ব্যক্তিগত (অন্তরঙ্গ) ছবি তোলে ও প্রকাশ করে তাহলে তিনি ১০ বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অন্যদিকে যদি কোন ব্যক্তি প্রতারণার অভিপ্রায়ে প্রেরকের বরাবরে এমন কোন ইলেকট্রনিক মেসেজ প্রেরণ করে যেটা বস্তুগতভাবে ভুল তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ক্ষতির মুখে নিপতিত করে তাহলে তিনি এই আইনের ১০ ধারানুযায়ী অনধিক ৫ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়াও অত্র আইনের ১৫ ধারানুযায়ী, কম্পিউটার বা কম্পিউটার সিস্টেমে শিশু পর্নোগ্রাফি বা শিশু সম্বন্ধীয় অশ্লীল উপাদান সংরক্ষণ করলে তিনি অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ তে সাইবার অপরাধ রোধে নানাবিধ শাস্তির বিধান আলোচিত হয়েছে। অত্র আইনের ২৭ ধারাতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি সাইবার সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনের অপরাধে চিহ্নিত হলে সে অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একইভাবে এই আইনের ২৮ ধারাতে বলা হয়েছে, ওয়েবসাইট বা কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত করে কোন মন্তব্য করলে অনধিক ৫ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অন্যের জন্য মানহানি বা অপমানজনক হয় এমন মন্তব্য করতে ব্যক্তিকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তৎসত্তে্বও কেউ যদি কারো মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করে তাহলে সে অত্র আইনের ২৯ ধারানুযায়ী অনধিক ৩ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়াও এই আইনের ৩৪ ধারামতে যদি কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং করে তাহলে সেটা একটি অপরাধ বলে গণ্য হবে। সেইসঙ্গে অপরাধটি সংঘটনের জন্য অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
can you buy priligy in usa The goal of this recommendation was to promote awareness of the complex relationship between CKD and AKI