প্রতিবছর ২রা এপ্রিল পালিত হয় বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। বিশ্ব অটিজম দিবস স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জাতিসংঘের সাতটি দিবসের মধ্যে অন্যতম।
অটিজম হচ্ছে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা, যেখানে শিশুদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ, সামাজিক আচরণ, সামাজিক কল্পনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বেশ সমস্যা লক্ষ করা যায়। শিশুর জন্মের প্রথম তিন বছরের মধ্যে এর লক্ষণ প্রকাশ পায়। অটিজম এমন একটি বিকাশজনিত সমস্যা, এতে ব্যক্তির মধ্যে বাইরের জগৎ সম্পর্কে অতি সামান্য আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। প্রকৃতপক্ষে অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির অন্য মানুষ বা বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে না বললেই চলে। বরং তার সব মনোযোগ যেন তার ইচ্ছা ও অনুভূতির মধ্যেই মগ্ন থাকে।
অটিস্টিক শিশুর বিকাশ তিনটি ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হয়, যেমন-সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধা অন্য কোনো ব্যক্তির প্রতি আগ্রহ না থাকা, কে কী করছে তা নিয়ে কৌতূহল না থাকা এবং অন্যের আচরণ বুঝতে না পারা। যোগাযোগ স্থাপনে বাধা; মুখের ভাষায় কথা বলতে না শেখা, কিছু কথা বলতে পারলেও অন্যের সঙ্গে আলাপচারিতায় সমর্থ না হওয়া এবং ইশারা-ইঙ্গিত করতে না পারা। আচরণের ভিন্নতা; পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ করা, একই কাজ বারবার করা এবং একই খেলা বারবার খেলা।
অটিজমের পেছনে দুটি কারণ রয়েছে—জিনগত সমস্যা এবং পরিবেশগত সমস্যা। বাংলাদেশে অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। ১৯৮০ সালে প্রতি দুই হাজার ৫০০ জনে একজন ছিল অটিস্টিক এবং ২০১০ সালে ছিল ১১০ জনে একজন অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু। বর্তমানে ৫৪ জনে একজন (সিডিসি, ২০১৮ থেকে)। সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ জরিপে (২০২০-২১) বর্তমানে বাংলাদেশে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুর সংখ্যা প্রায় ৬১ হাজার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য একটি জরিপে (২০১৩ সাল) বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। সম্প্রতি ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিস-অর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা)’-এর এক গবেষণায় বাংলাদেশে তিন বছরের নিচের শিশুদের অটিজমের হার ১০ হাজার জনে ১৭ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলোতে ৩৪টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র রয়েছে। দেশের সব জেলার প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে একটি করে অটিজম কর্নার (১০৭টি) স্থাপিত হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও অটিজম রোগীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সারা বিশ্বে অটিস্টিক শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য ও একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত মনোবিজ্ঞানী তিনি। সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ২০০৮ সাল থেকে শিশুদের অটিজম এবং স্নায়ুবিক জটিলতাসংক্রান্ত বিষয়ের ওপর কাজ শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যে তার কাজ বিশ্বজুড়ে প্রশংসা পায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে পুতুলকে ‘হু অ্যাক্সিলেন্স’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে।
মনস্তত্ত্ববিদ সায়মা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অটিজম স্পিকসের পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেন। তিনি ২০১৩ সালের জুন থেকে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হন।
বর্তমানে অটিজম নিয়ে বাংলাদেশ তথা বিশ্বজুড়েই নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সবার মধ্যে বেড়েছে সচেতনতা। বাংলাদেশেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায় অটিজম আক্রান্তরা নানাভাবে ভূমিকা রেখে চলেছেন। এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সবচেয়ে বেশি আন্তরিকতা লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত আগ্রহ প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষিত করছে আগের চেয়ে বেশি।
সমাজে অটিজমকে এক সময় পাপ-অভিশাপ ভাবা হতো। অটিস্টিক শিশুদের সমাজের বোঝা মনে করা হতো। সমাজসেবায় কিছু সংগঠন কাজ করলেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরা পরিবারের কাছেও ছিল অবহেলিত। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অটিজম মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। দক্ষ-অভিজ্ঞ প্রশিক্ষিতদের তত্ত্বাবধান, বিশেষ শিক্ষা কর্মসূচির ব্যবস্থা, খেলাধুলা, শরীর চর্চা, বইপড়া, প্রত্যেক প্রতিবন্ধী শিশুর বিশেষ চাহিদা পূরণ, বিকলাঙ্গ শিশুদের আর্থিকভাবে বিশেষ ব্যবস্থার আওতায় আনা এবং মানসিক-শারীরিক অটিস্টিক শিশুদের উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ‘হু অ্যাক্সিলেন্স’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। তার উদ্যোগেই ২০১১ সালের জুলাইয়ে ঢাকায় অটিজম নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের পর গড়ে ওঠে সাউথ এশিয়ান অটিজম নেটওয়ার্ক। সংগঠনটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অটিস্টিক শিশুদের স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, সামাজিক মর্যাদা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সহায়তা দিতে অবকাঠামো গড়ে তোলে। প্রধানমন্ত্রীর কন্যার দেখাদেখি দেশের অনেক বিত্তবান এবং পরোপকারী মানুষ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুদের সহায়তায় এগিয়ে আসছেন; অর্থ সহায়তা দিচ্ছেন এবং সেবা করছেন। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, জনশক্তিতে পরিণত হচ্ছে।
প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি ও তাদের জন্য অবকাঠামোগত পরিবেশ নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুরা যাতে সাধারণ ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মিশতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিবিড় শিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রত্যেক প্রতিবন্ধীকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে অটিজম কর্নার। প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে। নীতিমালার আওতায় ৫০টি বিদ্যালয়ে প্রায় ১০ হাজার প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রী পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে।
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিশেষ বা একীভূত শিক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম, অটিস্টিকদের বিনামূল্যে বিভিন্ন সেবা প্রদান, অটিজম আক্রান্ত শিশুদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ইনস্টিটিউট অব নিউরো ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম প্রতিষ্ঠা, প্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে ফিজিওথেরাপিসহ অন্য চিকিৎসা প্রদানের জন্য ৬৪ জেলায় ১০৭ প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্র স্থাপন, ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে ঘরে বসে প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সেবাগ্রহণে সরকারের পদক্ষেপসহ সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা রাখা প্রতিবন্ধীদের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের বড় উপহার।
আমাদের সমাজের অনেকেই আছেন যারা প্রতিবন্ধীদের অবহেলা করেন। তাদের জানা উচিত প্রতিবন্ধীরাও মানুষ। তাদের প্রতি সমাজ ও রাষ্ট্রের বিশেষ দায় থাকা উচিত। প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করতে হবে আমাদের সবাইকে।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলকে নির্বাচিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। অটিজম অর্থাৎ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য পুতুলের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন, সাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো, শিশুদের দুর্ভোগের জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করা এবং তাদের বাবা-মা ও যতœকারীদের নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগের কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে বলে জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বলা হয়, পুতুল তার নিজ দেশ বাংলাদেশে স্বাস্থ্য এজেন্ডায় অটিজম ইস্যুকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে যে চেষ্টা করেছেন তা অভূতপূর্ব। এছাড়াও বাংলাদেশকে অটিজমের বিষয়ে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক মনোযোগ আকর্ষণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
pfizer cialis buy cialis 10mg online cheap pills erectile dysfunction
altace 5mg sale altace 5mg usa purchase etoricoxib pill
buy levitra 20mg generic order plaquenil 400mg online buy hydroxychloroquine 200mg without prescription
buy mesalamine order asacol pill irbesartan 300mg for sale
order levitra 10mg generic cost vardenafil plaquenil 400mg for sale
buy temovate online cheap oral cordarone 200mg buy cordarone 100mg pills
order olmesartan 10mg sale order calan 240mg generic depakote 500mg
buy generic temovate over the counter buy buspirone generic amiodarone 100mg ca
acetazolamide 250 mg oral isosorbide 20mg us purchase azathioprine pills