এস চাঙমা সত্যজিৎ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ বিতরণে অবৈধভাবে অর্থ প্রদানকারী ও অর্থ গ্রহণকারীকে (উভয়কে) চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল সরবরাহের তালিকা প্রস্তুত করার সময় অবৈধ উপায়ে অর্থ বিনিময় হয়েছে বলে অভিযোগে জানতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকাবাসীর মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সোলার প্যানেল সিস্টেম বিতরণের নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানে সোলার প্যানেল বিতরণে কোনো প্রকার দুর্নীতি অনিয়মের বরদাশত করা হবে না।
আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন প্রকল্পস মূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এসব কথা বলেছেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত প্রকল্পের কাজ অবশ্যই দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি যথাসময়ের মধ্যে প্রকল্প কাজের গুণগতমান অক্ষুন্ন রেখে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করারও তাগিদ দেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বরাদ্দকৃত প্রকল্পের সার্বিক স্কিম ও উন্নয়ন কাজ যথাসময়ের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে করার জন্য তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদেরকে নির্দেশ প্রদান করেন।
তিনি (মন্ত্রী) বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যেই গৃহীত স্কিমসমূহের কাজ সম্পন্ন করা এবং ব্যয় বৃদ্ধি বা বকেয়া থাকার প্রবণতা বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্ত্রী যত্রতত্র প্রকল্প গ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ভূমির জোন ভিত্তিক পরিকল্পিত উপায়ে প্রকল্প কাজ গ্রহণ করতে হবে। যেখানে কৃষি জমি চাষের উপযোগী জমি রয়েছে সেখানে কৃষি চাষ প্রকল্প, যেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার উপযোগী জায়গা রয়েছে সেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যেখানে হাট-বাজার উপযোগী স্থান রয়েছে সেখানে হাট-বাজার বসানো, যেখানে বাগান করার উপযোগী জায়গা রয়েছে সেখানে বাগান করার প্রকল্ল এবং যেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উপযোগী স্থান পাওয়া যাবে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে বলেও সভায় জানান তিনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্গম ও প্রত্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আগামী ৩০ জুন ২০২৩ তারিখের মধ্যে ৪২ হাজার ৫০০ পরিবারের মাঝে সোলার প্যানেল বিতরণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে সভায় জানানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পসমূহের বরাদ্দ ও ব্যয়ের মধ্যে অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা ১৬টি ও উন্নয়ন সহায়তা ৩টি। যার এ অর্থবছরের মোট বরাদ্দের ৪১.৪১ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে তিনি সভায় জানিয়েছেন।
বিগত ২৯ মার্চ ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা; ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাস্তবায়নাধীন এডিপিভুক্ত প্রকল্প, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন সহায়তা (কোড-২২১০০০৯০০), পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের জন্য উন্নয়ন সহায়তা (কোড-২২১০০১১০০) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার উন্নয়ন সহায়তা (কোড-২২১০০১০০০) এর আওতায় গৃহীত স্কিমসমূহের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগমের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্য্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুই প্রু চৌধুরী অপু, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (উন্নয়ন) মোঃ হুজুর আলী, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (বাস্তবায়ন) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, সদস্য (পরিকল্পনা) মোঃ জসীম উদ্দিন প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।