এস চাঙমা সত্যজিৎ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার লতিবান ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের দ্বীগেন্দ্র পাহাড় বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের রাস্তায় লতিবাঁশছড়ার উপর সেতু না থাকায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। শুধু জনদুর্ভোগের কারণ নয়। এ দ্বীগেন্দ্র পাহাড় বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে শুধু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধায় পড়তে হয়নি। স্থানীয় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকাবাসীর মধ্যেও লতিবাঁশছড়ার উপর সেতু না থাকার কারণে যোগাযোগের মারাত্মক ক্ষতিকর হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার লতিবান ইউনিয়নের দ্বীগেন্দ্র পাহাড় বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের রাস্তায় লতিবাঁশছড়ার উপর সেতু না পবিত্র পবারনা (প্রবারণা) পূর্ণিমা বা আশ্বিনী পূর্ণিমার সময় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের যোগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধায় পড়তে হয়। এই বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে দানোত্তোম কঠিন চীবর দানের উৎসবের সময় বেশি জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। এই বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে কঠিন চীবর দানের সময় শুধু খাগড়াছড়ি জেলা উপজেলা বাসীদের অনুষ্ঠানে আসেনি। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও রাঙামাটি পার্বত্য জেলার ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার এবং চট্রগ্রাম থেকেও বড়ুয়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাও কঠিন চীবর দানের অনুষ্ঠানে যোগদান করে থাকেন। বিশেষ করে এই বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে । এই ভাবনা কেন্দ্রটি হচ্ছে বান্দরবান পার্বত্য জেলার আধ্যাত্মিক বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু শ্রীমৎ উঃ পাঞ্ঞাজোত মহাথের ভন্তের শিষ্যদের প্রতিষ্ঠিত বৌদ্ধ ধর্মের বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের উদ্যোগ। প্রতি বছর এই ভাবনা কেন্দ্রের কঠিন চীবর দানের সময় গুরু ভন্তের প্রধান শিষ্য শ্রীমৎ উঃ সাক্কা জোত মহাথের ভন্তের আগমন ঘটে। তাঁর ধর্ম দেশনায় মহাকারুণিক ভগবান গৌতম বুদ্ধের অমোঘ বাণী সুললিত কন্ঠে বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের কঠিন চীবর দানের সময় গুরু ভন্তের ভক্তবৃন্দসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শ্রবণ করে থাকেন।
দ্বীগেন্দ্র পাহাড় বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে যাওয়ার সময় রাস্তায় যেতে হবে। পানছড়ি কলেজ গেইট থেকে গঙ্গারাম পাড়া সড়কের নবীন চন্দ্র পাড়া থেকে লতিবাঁশছড়া পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ পূর্ব দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রটি। এই বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে যেতে হলে নবীন চন্দ্র পাড়া থেকে লতিবাঁশছড়ার উপর সেতু পেরিয়ে যেতে হবে। এখানে লতিবাঁশছড়ায় সেতু না থাকায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। তাই তাঁরা স্থানীয় সরকার বিভাগের নিকট সহ স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, ৩০৯ নং আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু সহ বিভিন্ন দপ্তরে লতিবাঁশছড়ার উপর সেতু নির্মাণ করার জন্য আবেদন নিবেদন করেছেন স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা। এতে বিগত ২০২২ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে সেতু নির্মাণ করার জন্য জরীপ বা সেতুর নকশা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।
।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ থেকেও এই দ্বীগেন্দ্র পাহাড় বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তায় লতিবাঁশছড়ার উপর সেতু নির্মাণ করার জন্য প্রাথমিক নীল নকশা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। এর বহু বছর আগেও একবার এই সেতুর নির্মাণ করার জন্য পাষছড়ি উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ থেকেও কয়েকবার সেতুর নির্মাণ করার জন্য নকশা করা হয়েছে। পানছড়ি উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শ্রীমতী মনিতা ত্রিপুরাও এসময় সেতু নির্মাণ করার জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সভার সময় বেশ কয়েকবার সেতুর জন্য আলোচনাও করেছেন বলে তিনি জানান। তাই নির্ধারিত সময়ে সেতুর নির্মাণ করা না হলে আগামী কঠিন চীবর দানের সময়ও ব্যাঘাত ঘটতে পারে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাই অনতি বিলম্বে দ্বীগেন্দ্র পাহাড় বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তায় লতিবাঁশছড়ার উপর একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য বর্তমান জনবান্ধব সরকারের নিকট সংবাদ মাধ্যমে জোর দাবি জানিয়েছেন।