সাংবাদিকনেতা শেখ তিতুমীর আকাশ:- বাংলাদেশের সংবিধানের ৭(ক) অনুচ্ছেদ বলা আছে-রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। তাই সরকারের কাছে যে তথ্য আছে সেটার মালিকও জনগণ। অর্থাৎ ঐ তথ্য শুধু সরকারের একার সম্পত্তি নয়। সরকার তার কাজকর্মের মাধ্যমে যে তথ্য সংগ্রহ করে বা তৈরি করে সেই তথ্য জানার অধিকার জনগণের। কারণ জনগণের সম্পদ কাজে লাগিয়ে, জনগণের উন্নতি বা মঙ্গলের জন্যই সরকার কাজ করে। আর এই ধারণা থেকেই এসেছে তথ্য জানার অধিকার। যা রাষ্ট্রের একজন সাধারন জনগণ ও গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য অনেক দরকারি।
আসুন জানি তথ্য অধিকার কী?
যেসব তথ্য সাধারণ নাগরিকের রাজনৈতিক, সাংবাদিকতা এ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অধিকার অর্জনে সহায়ক, যার অভাবে এই অধিকারগুলো অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়ে, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিক নিরবচ্ছিন্নভাবে বা বাধাহীনভাবে অংশ নিতে পারে না, সেসব তথ্য পাওয়ার অধিকারকে সাধারণভাবে আমরা তথ্য অধিকার বলে বা আমরা বুঝি। ।তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে জনগণ সরকার, সরকারি ও বিদেশি সাহায্যপুষ্ট বেসরকারি সংস্থা বা এনজিওর কাছ থেকে তাদের কাজ বা লেনদেন-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য চাইতে পারবে। যা আগে তারা জনগণকে দিতে বাধ্য ছিল না এবং জনগণকে জানতে দিতে চাইত না।
সে পরিপারিক আমরা আমাদের বাংলাদেশে তথা কিছু পূর্বে ঘটনা গুলো যদি মনে করি এ ব্যাপারে সাংবাদিক রা এসব তথ্য জানার অধিকার থাকলেও জানতে পারতেন না অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক বনিবনার কারণে অনেক ঘটনার পরিস্থিতির মোকাবেলা পূর্বে থেকে এখনো ফেইজ করতে হয় সাংবাদিকদের, তাই সরকার সর্ব দিকে রাষ্ট্রের জননিরাপত্তার সার্থে সকল দিকে বিবেচনা করে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাশ করেন । এ আইন পাশ হয় । প্রথমে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ২৯ মার্চ—২০০৯-এ পাশ করে ছিলো এরপর, ৫ ই এপ্রিল—২০০৯-এ রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে এবং ৬ ই এপ্রিল— ২০০৯-এ বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়।
পরে ধারাবাহিক ভাবে সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় পর্যাক্রমে প্রকাশ করে যেমন :—
★তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর বিষয়ে কিছু তথ্য:
এই আইন নাগরিকদের অধিকার হিসেবে সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পথ প্রশস্ত করেছে।
★এটি নাগরিকদের মত প্রকাশের মৌলিক স্বাধীনতার জন্য একটি স্বীকৃত এবং তাৎপর্যপূর্ণ আইনী উপকরণ।
★তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আলোকে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল সাধারণ সভায় যে বিষয় গুলো অতি গুরত্বপূূর্ণ সে বিষয় গুলো প্রজ্ঞাপন জারি করে।
★বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের নির্দেশনা অনুপাতে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আলোকে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)স্বতঃ প্রণোদিত ভাবে তথ্য প্রকাশ করে। যা সাংবাদিকদের জন্য অতি দরকারি ও উপযোগী
আসুন এ বিষয় আরো একটু ক্লিয়ার করে জানার জন্য বোঝার জন্য একটু উপমা স্বরুপ আলোচনা করি মনে করেন ...
ঢাকার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা খুব সহজেই ওয়ার্ড কমিশনারের কাছে জানতে চাইতে পারবে, এমন কি সামাজিক কিছু সমস্যা সামাজিক উন্নয়ের বিষয় অনেক সময় সাধারন জনগণ অনেক সময় একজন সাংবাদিকদের সহায়তা নেয় তখন সে সাংবাদিক জনদূরভোগ থেকে সমাজের উন্নতি করণে এলাকার রাস্তা মেরামতের জন্য সরকার থেকে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে?
সে বিষয় সহ নানান বিষয় জানার জন্য এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত জনপ্রতিনিধি কী ওয়ার্ড কমিশনারও এই তথ্য দিতে বাধ্য থাকবেন এবং আবার অন্যদিকে একজন সাধারণ মানুষ অথবা সংবাদকর্মী আইলা-দুর্গত এলাকায় কর্মরত কোনো এনজিও এর কাছে জানতে চাইতে পারবেন , এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কত বরাদ্দ পেয়েছে এনজিও টি সরকারের অথবা বিদেশি দাতা সংস্থার কাছ থেকে পেয়েছে তাহার বিধি হিসেব ই তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে জন গুরুত্বপূর্ণ সেসব তথ্য জনগণ সহ গণমাধ্যম কর্মীদের জানার অধিকারের মধ্যে আনা হয়েছে।
যেসব তথ্য কর্তৃপক্ষ আগে গোপন রাখত, এখন এই আইনের অধীনে তা দিতে সরকার ও এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত জনপ্রতিনিধি সহ বেসরকারি সংস্থা দিতে বাধ্য।
তথ্য অধিকার আইনের আওতায় তথ্য গুলো কী ?
আসুন জানি ....
তথ্য অধিকার আইনের ২(চ) ধারায় তথ্য অর্থ কোনো সরকারি এবং সরকারি ও বিদেশি সাহায্যপুষ্ট বেসরকারি সংস্থার গঠন, কাঠামো ও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড-সংক্রান্ত যেকোনো স্মারক, বই, নকশা, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগ বই, আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, দলিল, নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প, প্রস্তাব, আলোকচিত্র, অডিও, ভিডিও, আঁকা ছবি, ফিল্ম, ইলেকট্রিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যেকোনো ইনস্ট্রমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিলপত্র সবই বোঝায়।
তবে লক্ষ রাখতে হবে-
★ দাপ্তরিক নোট শিট বা নোট শিটের প্রতিলিপি এর মধ্য অন্তর্ভুক্ত হবে না।
★ এই আইনের অধীনে 'তথ্য' হচ্ছে সরকারের কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত অপ্রকাশিত সব তথ্য। সাধারণত 'তথ্য' বলতে আমরা যা বুঝি তার সঙ্গে এর পার্থক্য আছে।
যেমন.......
একটি উপজেলা ভিক্তিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কতজন চিকিৎসক আছেন, সেখানে কতজনের থাকা উচিত এবং চিকিৎসক কেন ডিউটি থেকে অনুপস্থিত আছেন এ সবকিছুর তথ্য জানার অধিকার সাংবাদিক সহ জনগণের আছে।
তথ্য সংরক্ষণ আসুন সে বিষয় একটু আলোচনা করি ....
তথ্য অধিকার আইনের ৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক কর্তৃপক্ষ তাদের যাবতীয় তথ্য এমনভাবে গুছিয়ে রাখবে, যাতে কেউ চাওয়ামাত্র তা দিয়ে দিতে পারেন। সব তথ্যের একটি ইনডেক্স বা ক্যাটালগ তৈরি করতে হবে স্পস্ট উল্লেখ্য করা আছে, এ ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আর যেসব তথ্য কোনো প্রতিষ্ঠান স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রকাশ করবে, সেটাও আলাদাভাবে ক্যাটালগ করে স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
এ ব্যপারে তথ্য কমিশন বলে দেবে তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য কোন নীতি অনুসরণ করতে হবে এবং সব কর্তৃপক্ষকে তা অনুসরণ করতে হবে।
বৃঃদ্র:- আরো কিছু এ ব্যপারে জানা শোনার আছে সে বিষয় গুলো পরের পোস্টে ধারা বাহিক ভাবে প্রকাশ করিব ততক্ষন পাশে থাকুন, এবং আমি একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে মনে করি এই আইনে আরো অনেক কিছুই উল্লেখ্য করা আছে তাহা সব কিছু জান শিখে রাখা ভালো , কিস্তু একজন সাধারণ জনগণ হিসেবে একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আমাদের প্রার্থমিক যতটুকু বেশি জানার উপযোগী সে গুলো তুলে ধরেছি এবং বাকী পোস্টে তাহাই তুলে ধরব।
(ধন্যবাদ)