সাংবাদিকনেতা শেখ তিতুমীর আকাশ:- বাংলাদেশের সংবিধানের ৭(ক) অনুচ্ছেদ বলা আছে-রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। তাই সরকারের কাছে যে তথ্য আছে সেটার মালিকও জনগণ। অর্থাৎ ঐ তথ্য শুধু সরকারের একার সম্পত্তি নয়। সরকার তার কাজকর্মের মাধ্যমে যে তথ্য সংগ্রহ করে বা তৈরি করে সেই তথ্য জানার অধিকার জনগণের। কারণ জনগণের সম্পদ কাজে লাগিয়ে, জনগণের উন্নতি বা মঙ্গলের জন্যই সরকার কাজ করে। আর এই ধারণা থেকেই এসেছে তথ্য জানার অধিকার। যা রাষ্ট্রের একজন সাধারন জনগণ ও গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য অনেক দরকারি।
আসুন জানি তথ্য অধিকার কী?
যেসব তথ্য সাধারণ নাগরিকের রাজনৈতিক, সাংবাদিকতা এ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অধিকার অর্জনে সহায়ক, যার অভাবে এই অধিকারগুলো অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়ে, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিক নিরবচ্ছিন্নভাবে বা বাধাহীনভাবে অংশ নিতে পারে না, সেসব তথ্য পাওয়ার অধিকারকে সাধারণভাবে আমরা তথ্য অধিকার বলে বা আমরা বুঝি। ।তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে জনগণ সরকার, সরকারি ও বিদেশি সাহায্যপুষ্ট বেসরকারি সংস্থা বা এনজিওর কাছ থেকে তাদের কাজ বা লেনদেন-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য চাইতে পারবে। যা আগে তারা জনগণকে দিতে বাধ্য ছিল না এবং জনগণকে জানতে দিতে চাইত না।
সে পরিপারিক আমরা আমাদের বাংলাদেশে তথা কিছু পূর্বে ঘটনা গুলো যদি মনে করি এ ব্যাপারে সাংবাদিক রা এসব তথ্য জানার অধিকার থাকলেও জানতে পারতেন না অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক বনিবনার কারণে অনেক ঘটনার পরিস্থিতির মোকাবেলা পূর্বে থেকে এখনো ফেইজ করতে হয় সাংবাদিকদের, তাই সরকার সর্ব দিকে রাষ্ট্রের জননিরাপত্তার সার্থে সকল দিকে বিবেচনা করে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাশ করেন । এ আইন পাশ হয় । প্রথমে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ২৯ মার্চ—২০০৯-এ পাশ করে ছিলো এরপর, ৫ ই এপ্রিল—২০০৯-এ রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে এবং ৬ ই এপ্রিল— ২০০৯-এ বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়।
পরে ধারাবাহিক ভাবে সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় পর্যাক্রমে প্রকাশ করে যেমন :—
★তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর বিষয়ে কিছু তথ্য:
এই আইন নাগরিকদের অধিকার হিসেবে সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পথ প্রশস্ত করেছে।
★এটি নাগরিকদের মত প্রকাশের মৌলিক স্বাধীনতার জন্য একটি স্বীকৃত এবং তাৎপর্যপূর্ণ আইনী উপকরণ।
★তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আলোকে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল সাধারণ সভায় যে বিষয় গুলো অতি গুরত্বপূূর্ণ সে বিষয় গুলো প্রজ্ঞাপন জারি করে।
★বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের নির্দেশনা অনুপাতে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আলোকে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)স্বতঃ প্রণোদিত ভাবে তথ্য প্রকাশ করে। যা সাংবাদিকদের জন্য অতি দরকারি ও উপযোগী
আসুন এ বিষয় আরো একটু ক্লিয়ার করে জানার জন্য বোঝার জন্য একটু উপমা স্বরুপ আলোচনা করি মনে করেন ...
ঢাকার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা খুব সহজেই ওয়ার্ড কমিশনারের কাছে জানতে চাইতে পারবে, এমন কি সামাজিক কিছু সমস্যা সামাজিক উন্নয়ের বিষয় অনেক সময় সাধারন জনগণ অনেক সময় একজন সাংবাদিকদের সহায়তা নেয় তখন সে সাংবাদিক জনদূরভোগ থেকে সমাজের উন্নতি করণে এলাকার রাস্তা মেরামতের জন্য সরকার থেকে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে?
সে বিষয় সহ নানান বিষয় জানার জন্য এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত জনপ্রতিনিধি কী ওয়ার্ড কমিশনারও এই তথ্য দিতে বাধ্য থাকবেন এবং আবার অন্যদিকে একজন সাধারণ মানুষ অথবা সংবাদকর্মী আইলা-দুর্গত এলাকায় কর্মরত কোনো এনজিও এর কাছে জানতে চাইতে পারবেন , এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কত বরাদ্দ পেয়েছে এনজিও টি সরকারের অথবা বিদেশি দাতা সংস্থার কাছ থেকে পেয়েছে তাহার বিধি হিসেব ই তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে জন গুরুত্বপূর্ণ সেসব তথ্য জনগণ সহ গণমাধ্যম কর্মীদের জানার অধিকারের মধ্যে আনা হয়েছে।
যেসব তথ্য কর্তৃপক্ষ আগে গোপন রাখত, এখন এই আইনের অধীনে তা দিতে সরকার ও এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত জনপ্রতিনিধি সহ বেসরকারি সংস্থা দিতে বাধ্য।
তথ্য অধিকার আইনের আওতায় তথ্য গুলো কী ?
আসুন জানি ....
তথ্য অধিকার আইনের ২(চ) ধারায় তথ্য অর্থ কোনো সরকারি এবং সরকারি ও বিদেশি সাহায্যপুষ্ট বেসরকারি সংস্থার গঠন, কাঠামো ও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড-সংক্রান্ত যেকোনো স্মারক, বই, নকশা, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগ বই, আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, দলিল, নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প, প্রস্তাব, আলোকচিত্র, অডিও, ভিডিও, আঁকা ছবি, ফিল্ম, ইলেকট্রিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যেকোনো ইনস্ট্রমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিলপত্র সবই বোঝায়।
তবে লক্ষ রাখতে হবে-
★ দাপ্তরিক নোট শিট বা নোট শিটের প্রতিলিপি এর মধ্য অন্তর্ভুক্ত হবে না।
★ এই আইনের অধীনে 'তথ্য' হচ্ছে সরকারের কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত অপ্রকাশিত সব তথ্য। সাধারণত 'তথ্য' বলতে আমরা যা বুঝি তার সঙ্গে এর পার্থক্য আছে।
যেমন.......
একটি উপজেলা ভিক্তিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কতজন চিকিৎসক আছেন, সেখানে কতজনের থাকা উচিত এবং চিকিৎসক কেন ডিউটি থেকে অনুপস্থিত আছেন এ সবকিছুর তথ্য জানার অধিকার সাংবাদিক সহ জনগণের আছে।
তথ্য সংরক্ষণ আসুন সে বিষয় একটু আলোচনা করি ....
তথ্য অধিকার আইনের ৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক কর্তৃপক্ষ তাদের যাবতীয় তথ্য এমনভাবে গুছিয়ে রাখবে, যাতে কেউ চাওয়ামাত্র তা দিয়ে দিতে পারেন। সব তথ্যের একটি ইনডেক্স বা ক্যাটালগ তৈরি করতে হবে স্পস্ট উল্লেখ্য করা আছে, এ ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আর যেসব তথ্য কোনো প্রতিষ্ঠান স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রকাশ করবে, সেটাও আলাদাভাবে ক্যাটালগ করে স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
এ ব্যপারে তথ্য কমিশন বলে দেবে তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য কোন নীতি অনুসরণ করতে হবে এবং সব কর্তৃপক্ষকে তা অনুসরণ করতে হবে।
বিশেষ সর্তক তার জন্য কিছু কথা :
আপনারা জানেন তথ্য আইন ২০০৯ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ
তথ্য অধিকার আইন। এই আইনের যে বিশেষ বিশেষ দিক গুলো আমি আপনাদের কাছে তুলে ধরছি সে গুলো কিন্তু একজন সংবাদক কর্মী থেকে শুরু করে সাধারন জনগণ সবার কাজে আসবে। তাই সবাই ভালো করে আমার তথ্য গুলো বুঝে পড়ে মনে রাখার চেষ্ঠা করবেন।
আসুন পরের কথা গুলোতে —
তথ্য আইন ২০০৯ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ
তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী ৭ ধরনের তথ্য প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে 'কর্তৃপক্ষ' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। 'কর্তৃপক্ষ' হচ্ছে দ্বিতীয় পক্ষ। আইন অনুযায়ী প্রতিটি তথ্য প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ এক-একটি তথ্য প্রদানকারী ইউনিট। তবে প্রয়োজন হলে একটি প্রতিষ্ঠানের একের বেশি তথ্য প্রদানকারী ইউনিট থাকতে পারে। কমপক্ষে একজন তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা থাকবেন। তিনি স্থায়ীও হতে পারেন অথবা অন্য কাজের সঙ্গে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্তও হতে পারেন।
যেমন:-
ইউনিয়ন পরিষদও কর্তৃপক্ষ এখানে উল্লেখ্য যে তথ্য প্রদান ইউনিট উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত হলেও ইউনিয়ন পরিষদও তথ্য প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে। আইনের প্রারম্ভিক সংজ্ঞা ২(খ)-তে বলা হয়েছে, 'কর্তৃপক্ষ' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সৃষ্ট কোনো সংস্থা, কাজেই সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে। ইউনিয়ন পরিষদ প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের কার্যালয় হিসেবে এবং স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ তথ্য প্রদানকারী ইউনিটও বটে।
এ বিষয়ের আইনে উল্লিখিত কর্তৃপক্ষসমূহ এবং উদাহরণ কর্তৃপক্ষ ধারা ২(খ) এর
উদাহরণ
১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সৃষ্ট কোনো সংস্থা। জাতীয় সংসদ, নির্বাচন কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট এবং পিএসসি।
২. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৫(৬) অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত কার্যবিধিমালার অধীনে গঠিত সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কার্যালয় সব মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, পরিকল্পনা কমিশন।
৩. কোনো আইন দ্বারা বা উহার অধীনে গঠিত কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান।
দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন।
৪. সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত বা সরকারি তহবিল হতে সাহায্যপুষ্ট কোনো বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান
এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ।
৫. বিদেশি সাহায্যপুষ্ট কোনো বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান। টিআইবি, ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
৬. সরকারের পক্ষে অথবা সরকার ও সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের সহিত সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক সরকারি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান।
বিভিন্ন সেতুর টোল আদায়কারী সংস্থা, বড় সেতু মেইনটেনেন্স করার সংস্থা, রেলওয়ের বিভিন্ন সার্ভিস পরিচালনাকারী সংস্থা।
৭. সরকার কর্তৃক সময় সময় সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান । আপিল কর্তৃপক্ষ।
আইনের ২(ক) ধারায় আপিল কর্তৃপক্ষের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, কোনো তথ্য প্রদান ইউনিটের ক্ষেত্রে উক্ত ইউনিটের অব্যবহিত ঊর্ধ্বতন কার্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান অথবা কোনো তথ্য প্রদান ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কার্যালয় না থাকলে উক্ত তথ্য প্রদান ইউনিটের প্রশাসনিক প্রধান। তথ্য চাহিদাকারী ব্যক্তি তার অনুরোধকৃত তথ্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না পেলে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করতে পারবেন।
তথ্য প্রকাশ এর বিষয় একটু তুলে ধরছি যেন আমরা আরো সচেতন হতে পারি :
তথ্য প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ তাদের সব ধরনের তথ্য অর্থাৎ তারা কী কাজ করেছে, কত টাকা এর জন্য বরাদ্দ রয়েছে বা কবেই বা কাজটি শেষ হবে সেই তথ্য প্রকাশ করবে। এ ছাড়াও কী কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো অথবা ভবিষ্যতে কী কী কাজ হাতে নিতে যাচ্ছে- এ-সংক্রান্ত সব তথ্য কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করবে।
তথ্য অধিকার আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিভিন্ন সরকারি কর্তৃপক্ষ বিদেশি সাহায্য ও সরকারি টাকায় পরিচালিত এনজিও কিছু তথ্য স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রকাশ করতে বাধ্য থাকবে। অর্থাৎ এসব তথ্য গোপন করা যাবে না এবং জনগণের সামনে তা যথাযথভাবে প্রকাশও করতে হবে। প্রত্যেক কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর কিছু তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য থাকবে।
নাগরিকের যেসব তথ্য পাওয়ার অধিকার আছে বা যেসব তথ্য স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রকাশ বা প্রচারে কর্তৃপক্ষ বাধ্য-
যেমন :-
১/ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গৃহীত সিদ্ধান্ত, কার্যক্রম কিংবা সম্পাদিত বা প্রস্তাবিত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য-
উদাহরণ: যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের ফি দেড় গুণ বাড়িয়েছে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। কেন তারা এই ফি বাড়াল? এতে জনগণের কী লাভ হবে? ফরম কীভাবে পাওয়া যাবে? পাসপোর্ট তৈরির দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষ এ সবকিছুর উত্তর দিতে বাধ্য।
২/ প্রকাশিত প্রতিবেদন-প্রত্যেক কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক বছর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। যেমন, একটি মন্ত্রণালয় বা এনজিওর বার্ষিক প্রতিবেদন বা Annual Report সেখানে থাকবে- সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কার্যক্রমের বিবরণ, কার্যক্রম
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব- সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার বিবরণ প্রতিষ্ঠানের সব নিয়মকানুন, আইন, অধ্যাদেশ, বিধিমালা, প্রবিধিমালা, প্রজ্ঞাপন, ম্যানুয়াল, তালিকাসহ রক্ষিত তথ্যের শ্রেণীবিন্যাস
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লাইসেন্স, পারমিট, অনুদান, বরাদ্দ, সম্মতি পাওয়ার শর্তসমূহ ও শর্তের কারণে কোনো ধরনের লেনদেন বা চুক্তি সম্পাদনের প্রয়োজন হলে শর্তগুলোর বিবরণ।
উদাহরণ: সরকার প্রত্যেক সংসদ সদস্যের জন্য যে ১৫ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করেছে, সেই টাকা কোন কোন খাতে, কত সময়ের মধ্যে ব্যয় হবে, কতজন সুবিধাভোগী হবে ইত্যাদি সবকিছু প্রকাশ করতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য। অথবা সরকারের নৌ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নদীবিষয়ক টাস্কফোর্স কেন আবার ঢাকা ও এর আশপাশের নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে, সেটারও বিস্তারিত বর্ণনা দিতে হবে- এতে কোনো অসুবিধা হবে কি না, লাভ পাবে কতজন।
৩/ নাগরিকের কাছে তথ্য অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রকাশ করতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম, পরিচয় এবং বিস্তারিত ঠিকানা। কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ কোনো নীতি বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে এসব নীতি ও সিদ্ধান্ত প্রকাশ করবে এবং প্রয়োজনে ঐসব নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সমর্থনে যুক্তি ও কারণ ব্যাখ্যা করবে।
উদাহরণ: সরকার বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলা করার জন্য ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক ধরনের মতামত থাকতে পারে। সরকারকে জানাতে হবে, কেন এই তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল? এতে দেশের কী লাভ হবে।
৪/ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত সকল প্রকাশনা জনগণের কাছে উপযুক্ত মূল্যে সহজলভ্য করতে হবে-
উদাহরণ: বার্ষিক প্রতিবেদন, তদন্ত রিপোর্ট, গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন, যেকোনো ধরনের বই বিনা মূল্যে বা স্বল্প মূল্যে দিতে হবে।
৫/ কর্তৃপক্ষ জনগুরুত্ব ও জটিল বিষয়গুলো প্রেস বিজ্ঞপ্তি বা অন্য কোনো পন্থায় প্রচার ও প্রকাশ করবে।
উদাহরণ: বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিদ্যুতের ব্যবহার, সময় ইত্যাদি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে দিচ্ছে।
৬/ মন্ত্রিসভায় কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সিদ্ধান্তের কারণ ও ভিত্তি-সম্পর্কিত তথ্য জানাবে। তবে এ ক্ষেত্রে তথ্য কমিশনের অনুমতি নিতে হবে।
উদাহরণ : মন্ত্রিপরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হলো 'ডে লাইট সেভিংস' (ডিএলএস) সময়সূচি আর প্রবর্তন করা হবে না। কেন সরকার এ রকম একটি সিদ্ধান্ত নিল তা ব্যাখ্যা করতে হবে।
আসুন এই আইনে আমরা নিজেরা আরো কিছু পরিস্কার করার জন্য বিশেষ করে সংবাদ মাধ্যম দের অবগত করার জন্য তুলে ধরছি যে—কিছু তথ্য প্রকাশ বা প্রদান বাধ্যতামূলক নয় সে বিষয় যুক্তি ভাবে তুলে ধরলাম :
তথ্য অধিকার আইনের আওতায় জনগণ সব তথ্য পাওয়ার অধিকার পেলেও ৭ ধারার বিশেষ কিছু তথ্য কর্তৃপক্ষ জনগণকে নাও দিতে পারে বা দিতে বাধ্য নয়। এই ধরনের বিধানকে আইনি ভাষায় 'রেয়াত' বলা হয়। বিশ্বের প্রায় সব দেশের তথ্য অধিকার আইনে এক্সেম্পশন বা রেয়াত-সংক্রান্ত ধারা রয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধানের 'মৌলিক অধিকার' ভাগে উল্লিখিত অধিকাংশ অধিকারই 'আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসম্মত বাধা-নিষেধ' সাপেক্ষে নিশ্চিত করা হয়েছে। সুতরাং তথ্য অধিকার আইনের ৭ ধারাকে সেই আলোকেই দেখতে হবে।
তথ্য আইন ২০০৯ এর ৭ ধারায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে—
এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ কোনো নাগরিককে বিশেষ কিছু তথ্য প্রদান করতে বাধ্য থাকবে না। তথ্য অধিকার আইনে এই ব্যতিক্রম পরিস্থিতি বা তথ্যগুলোর ব্যাপারে ধারা ৭-এর ২০টি উপধারায়, ধারা ২-এর (চ) এবং ধারা ৩২-এ আলোচিত হয়েছে। অন্যভাবে বলা যায়, উল্লিখিত ২০টি বিষয় বাদ দিয়ে বাকি সব বিষয়ে তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে এই আইন 'কর্তৃপক্ষের' ওপর আইনানুগ দায়দায়িত্ব সৃষ্টি করেছে।
তাই এ বিষয়ে ক্লিয়ার করার জন্য এই আইনের ধারা ৩২: তুলে ধরলাম :-
এ কিছু বিষয় জনসাধারণ ও বিশেষ করে সংবাদ মাধ্যমে জানা জরুরি তাই আসুন জানি :-
সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানসমূহ, যারা তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর অধীনে কোন তথ্য দিতে বাধ্য নয়-
যেমন :
১/ জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই).।
২/ ডাইরেকটরেট জেনারেল ফোর্সেস ইনটেলিজেন্স (ডিজিএফআই)।
৩/ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা ইউনিটসমূহ ।
৪/ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি), বাংলাদেশ পুলিশ।
৫/স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এনএসএফ)।
৬/জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা সেল।
৭/স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ।
৮/র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর গোয়েন্দা সেল।
তবে এ ধারায় স্পষ্ট করে আরো উল্লেখ আছে কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে বা কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্য দিতে বাধ্য।
যেমন:--
দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর কেউ বা কোনো সেল জড়িত থাকলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোও চাহিদাকৃত তথ্য দিতে বাধ্য থাকবে।
যেমন:-
র্যাব বা সিআইডির দপ্তরে কোনো অভিযুক্ত আসামি যদি মারা যায় বা র্যাবের সঙ্গে ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার ঘটনা, যাকে মানবাধিকার পরিপন্থী মনে করা হচ্ছে, সে সম্পর্কে তথ্য দিতে সংস্থা বাধ্য থাকবে। র্যাব বা পুলিশের সকল বিভাগ নয়, কেবল উল্লিখিত বিভাগ বা সেলই এই অব্যাহতির আওতাভুক্ত হবে।
এবার আসুন এই আইনে জন সাধারণ ও বিশেষ করে সংবাদ মাধ্যমের জন্য কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে আমি তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর ভালো দিক সমূহ ও খারাপ দিক সমূহ আছে সে বিষয় গুলো পরের পোস্টে আলোচনা করব।
(৬) তথ্য প্রদানে রেয়াতের ব্যাপকতা.....
এই আইনের আওতায় জনগণ সব তথ্য পাওয়ার অধিকার পেলেও বিশেষ কিছু তথ্য কর্তৃপক্ষ জনগণকে নাও দিতে পারে বা দিতে বাধ্য নয়। তথ্য অধিকার আইনে এই ব্যতিক্রম পরিস্থিতি অনেক ব্যাপক। ধারা ৭-এর উপধারাগুলো আসলে ২০টি সুনির্দিষ্ট তথ্যকে নির্দেশ করছে না, বরং ২০টি পরিস্থিতিকে নির্দেশ করছে। প্রতিটি পরিস্থিতিতে সুনির্দিষ্ট অনেক তথ্য থাকতে পারে। এই বিধি নিষেধকে একটি দুর্বলতা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এই রেয়াতসংক্রান্ত ধারা নিয়ে আইন প্রণয়নের আগে এবং এখনো ব্যাপক কথাবার্তা অর্থাৎ সমালোচনা হয়েছে এবং হচ্ছে। বিশেষ করে, সাংবাদিকরা তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ সংক্রান্ত এই বিধানকে তাঁদের কাজের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা বলে মনে করছেন। অন্যদিকে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও বারবার 'স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের' ওপর জোর দিয়েছেন। তাঁরাও মনে করেন, এক্সেম্পশনের তালিকা এত বড় হওয়া উচিত নয়।
(৭) দাপ্তরিক নোট প্রসঙ্গ.....
২-এর চ ধারায় দাপ্তরিক নোট সিট বা নোটের প্রতিলিপি সংক্রান্ত আইনের এই বিধানটি তথ্য অধিকার আইনের মূল বিধানের পরিপন্থী। কারণ কোনো একটি বিষয়ে দাপ্তরিক নোট শিট জনগণের হাতে না এলে তারা বুঝতে পারবে না এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াটি কেমনভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং কার কী ভূমিকা ছিল? ভারতে প্রথমদিকে নোট শিট প্রদানকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। পরে সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর চাপে নোট শিট দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। বাংলাদেশেও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও নাগরিক সমাজ এই ধারাটি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।
(৮) বিনা মূল্যে তথ্যপ্রাপ্তি.....
৮-এর ৫ ধারায় কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-শ্রেণীকে বিনা মূল্যে তথ্যপ্রাপ্তির কথা বলা হলেও কে বা কারা এই ব্যক্তি-শ্রেণী এবং কোন তথ্য বিনা মূল্যে পাওয়া যাবে তা নির্ধারণের দায়িত্ব তথ্য কমিশনকে দেওয়ার বিধানটি জটিল। অথচ ভারতের আইনে সরাসরি নির্দেশ দেওয়া আছে যে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষগুলো সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে তথ্য পাবে বা পেতে পারে। দরিদ্রদের বিনা মূল্যে তথ্য পাওয়ার দিকটি খুবই ইতিবাচক একটি দিক। কিন্তু তথ্য কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে 'দরিদ্র' নির্ধারণ করার বিষয়টি অনর্থক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা থেকে যায়। তা ছাড়া তথ্য কমিশন কতটা দরিদ্রবান্ধব হবে তার ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করবে। সেজন্য তথ্য কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করার বিষয়টি বাতিল হওয়াই যুক্তিসঙ্গত।
(৯) আদালতে যাওয়ার সুযোগ.....
তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদনকারীর বঞ্চিত হয়ে আদালতে যাওয়ার যে সুযোগ রয়েছে তার প্রক্রিয়াটি বেশ দীর্ঘ ও জটিল। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে একজন নাগরিক সময়ক্ষেপণ না করেই একটি নির্দিষ্ট সময় পরেই ফেডারেল কোর্টে অভিযোগ করতে পারেন।
Freedom of Information Act (১৯৬৬) অনুযায়ী আবেদনকৃত তথ্য যদি ১০ দিনের মধ্যে সরবরাহ করা না হয়, সে ক্ষেত্রে নাগরিকরা ফেডারেল কোর্টে অভিযোগ করতে পারেন। আবেদনকারীর সে তথ্য পাওয়ার অধিকার আছে কি নেই, ফেডারেল কোর্টে আবেদন করার ২০ দিনের মধ্যে তা সুরাহা হয়ে যায়। আবার কোনো আবেদনকারী যদি আবেদনকৃত তথ্যের পুরো বর্ণনা দিতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে একটি যুক্তিযুক্ত বিবরণ দিলেও তাঁকে তথ্য দেয়া যায়। বাংলাদেশের আইনেও বিষয়টি এমন সহজ করা যায়।
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর ভালো দিকসমূহ
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ একটি অতি সম্ভাবনাময় আইন। মানুষ যেন তাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য খুব সহজে সরকারের কাছ থেকে আদায় করতে পারেন সেজন্যই এরকম একটি আইন প্রণীত হয়েছে। দেখা গেছে, জনগণ প্রতিনিয়ত যেসব সমস্যা, হয়রানি ও বঞ্চনার শিকার হয় বা হচ্ছে এর অন্যতম বড় একটি কারণ তারা প্রয়োজনীয় তথ্যটি জানে না বা পাচ্ছে না। যেমন, প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা হয়তো জানেই না যে তাদের জন্য সরকার বিনা মূল্যে বই দেয়। তারা জানে না, কতগুলো বই একটি উপজেলার জন্য বরাদ্দ আছে। স্কুলে বইগুলো হিসাবমতো এসেছে কি না। প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা এসব তথ্য জানে না বলে তারা দাবিও জানাতে পারে না।
এই আইন কতটা কার্যকর বা কতটা উপকারী তা প্রমাণ করতে হবে জনগণকেই। জনগণ যদি এই আইনের ইতিবাচক দিকগুলোর চর্চা না করে, তবে এটি সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ একটি আইনে পরিণত হবে। একে সফল করার দায়িত্ব জনগণের। যথাযথভাবে চাহিদা সৃষ্টি করতে না পারলে তথ্য দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়বে। এই বিষয় গুলো ভাগ ভাগ করে সবাইকে বোজার জন্য তুলে ধরা হলো।
যেমন —
১. বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইনের আওতায়......
এই আইনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক হলো- বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ সরকারি সহায়তাপুষ্ট ও বিদেশি সাহায্যনির্ভর এনজিওগুলো এই আইনের আওতাভুক্ত। সম্ভবত বাংলাদেশের আইনেই এটা একমাত্র সন্নিবেশিত হয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের পাশাপাশি এনজিওর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি অনস্বীকার্য। কারণ তারাও জনগণের কল্যাণে অর্থ খরচ করে।
২. প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য সুবিধা.....
কর্তৃপক্ষ যাতে প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতি কোনোরূপ বৈষম্যমূলক আচরণ করতে না পারে এবং প্রতিবন্ধী মানুষ যাতে সহজেই তথ্য পেতে পারে সেজন্য আইনে একটি ধারা রাখা হয়েছে (ধারা ৯-এর ১০)। কোনো ইন্দ্রিয়প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে কোনো রেকর্ড বা এর অংশবিশেষ জানানোর প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঐ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে তথ্য লাভে সহায়তা প্রদান করবেন এবং পরিদর্শনের জন্য যে ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন তা প্রদান করাও এ সহায়তার অন্তর্ভুক্ত।
৩. তথ্যমূল্য দিতে হবে না......
দেশের জনগোষ্ঠীর যে অংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে তারা যেন বিনা মূল্যে তথ্য পেতে পারে, এটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তথ্য অধিকার আইনের ধারা ৮(৫) অনুযায়ী 'সরকার, তথ্য কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে ক্ষেত্রমত, কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তি শ্রেণীকে কিংবা কোন শ্রেণীর তথ্যকে উক্ত মূল্য প্রদান হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।'
৪. আদালতে যাওয়ার সুযোগ....
কোনো নাগরিক যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য না পায়, তবে সে কর্তৃপক্ষের ভিতরকার আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করতে পারবে। তার পরও নাগরিক যদি আপিল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না থাকে, তবে সে তথ্য কমিশনের কাছে অভিযোগ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার যে, কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি যদি কর্তৃপক্ষের কাছে সময়মতো তথ্য না পায়, তবে সে আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সব সিদ্ধান্তের বিষয় ও 'সময়'-সংক্রান্ত সবকিছুর জন্য আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাতে হবে। আর কর্তৃপক্ষ যদি নাগরিককে ভুল তথ্য বা অর্ধসত্য তথ্য দেয়, তাহলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে তথ্য কমিশনের কাছে যেতে হবে। তথ্য কমিশনের মূল কাজ হলো বিচারিক এবং আপিল কর্তৃপক্ষের মূল কাজ প্রশাসনিক। তথ্য কমিশনের বিচার বা জবাবে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি যদি খুশি না হয় তবে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে উচ্চ আদালতে রিট করে প্রতিকার চাইতে পারে।
৫. তথ্য কমিশনের পূর্বানুমতির প্রসঙ্গ.....
আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী আইনে ২০টি অব্যাহতি রয়েছে অর্থাৎ কতিপয় তথ্য প্রকাশ বা প্রদান বাধ্যতামূলক নয়। এই ২০টি অব্যাহতি তথ্য অধিকারকে সংকুচিত করলেও ধারা ৭ (ন)তে বলা হয়েছে, 'তবে শর্ত থাকে যে, মন্ত্রিপরিষদ বা ক্ষেত্রমত উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবার পর অনুরূপ সিদ্ধান্তের কারণ এবং যে সকল বিষয়ের ওপর ভিত্তি করিয়া সিদ্ধান্তটি গৃহীত হইয়াছে উহা প্রকাশ করা যাইবে।' 'আরো শর্ত থাকে যে, এই ধারার অধীনে তথ্য প্রদান স্থগিত রাখিবার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তথ্য কমিশনের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।' অর্থাৎ মন্ত্রিপরিষদে গৃহীত কোনো সিদ্ধান্ত যদি কর্তৃপক্ষ প্রকাশ না করতে চায়, তাহলে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগেই কর্তৃপক্ষকে তথ্য কমিশনের অনুমতি নিতে হবে। ধারা ৭ এর অন্যগুলোর ক্ষেত্রে তথ্য কমিশনের পূর্বানুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই।
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর দুর্বল দিকগুলো—
আলোচনা করি —
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে একটি আইনি ভিত্তি। মানুষ এখন খুব সহজেই এই আইন প্রয়োগ করে তথ্য চাইতে পারবে। আর অন্যদিকে যিনি তথ্য দেবেন, তিনিও কোনো ভয়ভীতি ছাড়া একটি আইনকে কাজে লাগিয়ে তথ্য দিতে পারবেন। তবে এই আইনের ভালো দিক যেমন আছে কিছু দুর্বল দিকও আছে। ঠিক সে বিষয় গুলো ভাগ ভাগ করে বোজানো হলো।
যেমন-
(১) তৃতীয় পক্ষের দায়িত্বের অস্পষ্টতা.....
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এ যদিও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য প্রদানের বাধ্যবাধকতার মধ্যে আনা হয়েছে, কিন্তু সেটা শুধু সরকারি ও বিদেশি অর্থে পরিচালিত বেসরকারি সংস্থাগুলো। ভোক্তা অধিকার থেকে শুরু করে ব্যক্তিখাতের দুর্নীতির তথ্য সরাসরি পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই এই আইনে। তবে ব্যক্তিখাতকে নিয়ন্ত্রণ করে যে সংস্থা তার মাধ্যমে তথ্য পাওয়ার সুযোগ আছে। অর্থাৎ এখানে সেই ব্যক্তিখাত তৃতীয় পক্ষের ভূমিকায় চলে যাবে। কোনো নাগরিক সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চাইলে সেই তথ্য তার কাছে না থাকলে, তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে সংগ্রহ করে নাগরিককে জানাতে পারবে। আবেদনের কত দিনের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য চাইতে হবে, সেটা স্পষ্টভাবে আইনে বলা আছে। কিন্তু এটা বলা নাই যে তৃতীয় পক্ষ কত দিনের মধ্যে উত্তর দেবে বা দিতে বাধ্য থাকবে। এর ফলে সমস্যায় পড়বে দ্বিতীয় পক্ষ এবং নাগরিক, যিনি তথ্যটি জানতে চেয়েছেন। কারণ দ্বিতীয় পক্ষকে কতদিনের মধ্যে নাগরিকের প্রশ্নের জবাব দিতে হবে, সেটা নির্ধারিত আছে। তিনি বা সেই কর্তৃপক্ষ যদি সেই সময়ের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের উত্তর না পান, তবে দ্বিতীয় পক্ষকে পড়তে হবে সমস্যায়। আর জনগণও তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে।
যেমন—
কোনো নাগরিক জানতে চাচ্ছেন নির্দিষ্ট একটি বেসরকারি বিমান কোম্পানি আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলের যে অনুমতি পেয়েছে, তাদের দক্ষ প্রকৌশলী ও পাইলটের সংখ্যা কত এবং তারা যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তার সব বিধি পালন করেছে কি না। নাগরিক সরাসরি ঐ বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইতে পারবেন না। তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে হবে দ্বিতীয় পক্ষ অর্থাৎ বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন কর্তৃপক্ষের কাছে। তারা তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ প্রাইভেট বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে এইসব প্রশ্নের উত্তর চাইবে এবং পরে নাগরিককে দেবে। উল্লেখ্য, ভারতে তথ্য অধিকার আইনে তৃতীয় পক্ষের উত্তর দেয়ার সময় নির্দিষ্ট করে দেয়ায়, জনগণ এখন যেমন সঠিক সময়ে তথ্য পাচ্ছে, তেমনিভাবে দ্বিতীয় পক্ষকেও কোনো সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে না।
(২) দীর্ঘসূত্রতা.....
আইন অনুসারে দেখা যাচ্ছে ক্ষেত্রবিশেষে তথ্য অধিকার আদায়ে ২১০ দিন লেগে যেতে পারে। তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে যদি তৃতীয় পক্ষ জড়িত থাকে, তাহলে দ্বিতীয় পক্ষ অর্থাৎ তথ্য প্রদান ইউনিট ৩০ দিন সময় পাবে। ৩০ দিন পর যখন সন্তোষজনক জবাব পাওয়া যাবে না, তখন তথ্য চাহিদাকারী নাগরিক আপিল করলে, সেই আপিল নিষ্পত্তির সময়সীমা ১৫ দিন। আপিলের রায় তথ্য চাহিদাকারীর পক্ষে গেলে তথ্য পাওয়ার জন্য তাঁকে আরো ৩০ দিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এর পরও যদি নাগরিক সংক্ষুব্ধ থাকেন, তাহলে তিনি তথ্য কমিশনে অভিযোগ করবেন। অভিযোগ নিষ্পত্তির সর্বোচ্চ সময়সীমা ৭৫ দিন। তথ্য কমিশনের রায় যদি তথ্য চাহিদাকারীর পক্ষে যায়, তবে নতুনভাবে তথ্য প্রদানের সময়সীমা হবে আরো ৩০ দিন।
(৩) রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য.....
তথ্য অধিকার আইনের ৭(ক) ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত কোনো তথ্য কখনোই প্রকাশিত হবে না বা প্রকাশ করা যাবে না। এতে করে দেখা যাবে রাজনৈতিক কারণে গ্রহণ করা অনেক সিদ্ধান্ত ও কালো আইন সম্পর্কে জনগণ কোনো দিনও জানতে পারবে না। চিরকাল দেশের ইতিহাসের কিছু অংশ মানুষের অজানা রয়ে যাবে।
যেমন—
আমাদের ভাষা আন্দোলন, গণ-অভ্যুথান ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত, পদক্ষেপ, পরিকল্পনা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতে পারব না। এটা চিরদিন আমাদের কাছে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি অজানা বিষয় হয়ে থাকবে। সেই সময়কার সরকারের কাছে ঐসব তথ্য ছিল রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত বিষয়। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস জানার জন্য ঐসব তথ্য এখন প্রকাশ হওয়া উচিত। আর তাই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত তথ্যগুলো প্রকাশের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া রাষ্ট্রেরই সাংবিধানিক কর্তব্য হওয়া উচিত। এই সময়সীমা ১২ থেকে ১৫ বছর হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্যগুলো সর্বোচ্চ ২৫ বছর পর উন্মুক্ত হয়ে যায়।
(৪) তথ্য প্রদায়কের সুরক্ষার বিষয়টি অস্পষ্ট....
তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রদায়কের (হুইসেল ব্লোয়ারের) সুরক্ষার বিষয়টি রয়েছে, তবে সেটা রয়েছে প্রচ্ছন্নভাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মতো সরাসরি নয়। তথ্য অধিকার আইনের ধারা ৩১ অনুযায়ী আইন দ্বারা অব্যাহতিপ্রাপ্ত নয়, এমন কোনো তথ্য অর্থাৎ যে তথ্য প্রদানে আইনি বাধা নেই এবং সেই তথ্য যদি কোনো জনস্বার্থবিরোধী কার্যকলাপকে প্রকাশ করে দেয়, তাহলে কোনো কর্মকর্তা সেই তথ্য প্রকাশ করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে প্রমাণ করতে হবে, তিনি তথ্য প্রকাশের কাজটি সরল বিশ্বাসে করেছেন। যদিও 'সরল বিশ্বাস' পরিমাপের কোনো পাল্লা- পাথর নেই। তবে ঐ কর্মকর্তা কেন এই তথ্য প্রকাশ করলেন, সে ব্যাপারে তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোনো চাপ প্রয়োগ করতে পারবে না।
যেমন—
কোনো একটি উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা যদি এরকম একটি তথ্য প্রকাশ করেন যে, এলাকায় খাসজমির একটা বড় অংশ প্রভাবশালী একটি মহল দখল করে নিচ্ছে। তাহলে তাঁকে প্রমাণ করতে হবে এ কাজটি তিনি জনস্বার্থে অর্থাৎ ভূমিহীন মানুষের স্বার্থে করেছেন। কারো বিরোধিতা করার জন্য নয়। জনস্বার্থবিরোধী কার্যকলাপকে উন্মুক্ত করলে বা প্রকাশ করলে ঐ কর্মকর্তাকে সুরক্ষার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে আইনে থাকলে ভালো হতো।
অথচ...... জাতিসংঘের তথ্যের স্বাধীনতা (২০০০)-এর নীতিমালায় খুব স্পষ্টভাবে বলা আছে তথ্য প্রদায়কের সুরক্ষার বিষয়টি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'হুইসেল ব্লোয়ার প্রটেকশন অ্যাক্ট ২০০৭' এবং ব্রিটেনের 'পাবলিক ইন্টারেস্ট ডিসক্লোজার অ্যাক্ট ১৯৯৮'- দ্বারা হুইসেল ব্লোয়ারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে।
(৫) তথ্য কমিশনের মর্যাদা.....
আইনের ১৭ ধারা অনুসারে প্রধান তথ্য কমিশনার ও তথ্য কমিশনারগণের পদমর্যাদা সরকার নির্ধারণ করবে। দৃশ্যত, এই পদমর্যাদার ওপর কমিশন কতটা শক্তিশালী হবে, সে বিষয়টি নির্ভর করবে। বর্তমান প্রধান তথ্য কমিশনারের পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা নির্দিষ্ট করা হয়েছে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায়। আর তথ্য কমিশনারদের পদমর্যাদা করা হয়েছে সচিব পর্যায়ে। তবে তাঁদের এই পদমর্যাদা এই সুনির্দিষ্ট কাঠামোতেই থাকবে কি না তার সরকারি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। কিন্তু তাঁদের ক্ষমতা যদি সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে, তাহলে সরকার প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা রয়েই যায়। একইভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তথ্য প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদমর্যাদাও তাঁর ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।
সর্বশেষ সবাইকে ধন্যবাদ।
কৃতজ্ঞতায় এই যে পুরো তথ্য আইন ২০০৯ এর সরকার যে পাশ করেছিল সেখানে এই আইনের অনেক বড় খসড়া এখানে সব টুকু অবশ্যই তুলে ধরা হয় নাই, একজন সাংবাদিক নেতা এবং সাংবাদিক সংগঠনের সংগঠক হিসেবে আমি মনে করি যে যে বিষয় গুলো তুলে ধরলে একজন সাংবাদিক কর্মী সেটার বিষয় অবগত থাকলে, তারা অনেক উপকৃত হবে, ফলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তারা অনেক অভিজ্ঞতার সাথে সংবাদ সংগ্রহ করতে পারবেন, তারা আইন জেনে আইনের সম্মানের সাথে দেশ ও জাতির সেবা করতে পারবেন, ফলে কমে আসবে সাংবাদিক দের উপর নানান হয়রানী , নির্যাতন, হামলা, মামলা,সেই সাথে প্রশাসনের সংবাদ কর্মীদের সাথে বাড়াবাড়ি করলে তাদের সঠিক পথে সঠিক আইন জানিয়ে একজন সাংবাদিক চলতে পারবেন।
তবে এই তথ্য আইন ২০০৯ এর পুরো প্রকাশিত খসড়া বিষয় যদি সবাই ধীরে ধীরে অবগত থাকেন তাহলে আরো ভালো হতে পারে বলে আমি মনে করি।
তবে আমি যত টুকু উপস্থাপন করেছি সে খানে আমি সরকার যে ভাবে প্রকাশ করেছেন, সেটাই আমি ও তুলে ধরেছি কিন্তু আমার সাংবাদিক ভাইবোন দের বোঝানোর জন্য আমি ব্যাখ্যা ও উহাহারণ যোগ করেছি, যাহা এ যাবৎ আমার মতন কেউ এমন উদ্ধের্গ নেয় নাই।
এবিষয়ে আমি একটি সাংবাদিকতার বই লিখেছি বইটির নাম সাংবাদিকতার প্রার্থমিক দিক নির্দেশনা, আর একটি লিখেছি সেটা সাংবাদিকতার জানা অজানা তথ্য, আমার এসব কিছু শুধু সাংবাদিক ভাইবোন দের সেবার জন্য লিখা, তাই তাদের কে আমার বই দুইটি উর্সগ করেছি, প্রতি বই মেলাতে বইটি পাওয়া যাবে।
ধন্যবাদ -
শেখ তিতুমীর আকাশ
সাংবাদিক নেতা ও সাংবাদিক সংগঠক, লেখক, কবি ও রাজনীতিবিদ।