1. admin2@dailysmtv24.com : admin :
  2. admin@dailysmtv24.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১০ অপরাহ্ন

সেন্টমার্টিন ভ্রমনে সতর্কতা অবলম্বন করুন।

Coder Boss
  • Update Time : বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১১ Time View

সেন্টমার্টিনের রিপ কারেন্ট ও বিপদজনক বিচ, যা সম্পর্কে আমাদের সকলের জানা থাকা উচিত।
বাংলাদেশের একমাত্র নীল পানির দ্বীপ বা সৈকতের জন্য সেন্টমার্টিন জনপ্রিয়। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটকের পদচারণায় মূখরিত হয় যার পুরো প্রান্তর। অনেক জল্পনা কল্পনার শেষে, এই বছর আবারো শুরু হয়েছে সেন্টমার্টিনের সাথে সকল রুটের জাহাজ চলাচল। কেউ হয়তো প্রথমবার, কেউ হয়তো অসংখ্যবারের মতন আবারো ছুটবেন সেন্টমার্টিনের পথে। কিন্তু কিছু কথা সেন্টমার্টিন নিয়ে অন্তত প্রতি সিজেনের শুরুতে না বললেই হয়তো নয়। সেন্টমার্টিন ভ্রমণ যাতে কারো কাছে বিষাদের বিষয় বস্তুতে পরিনত না হয় তাই সেন্টমার্টিন যাবার পূর্বেই জেনে নেয়া দরকার।

মনে আছে, কিছুদিন আগে ভাইরাল হওয়া নেটওয়ার্ক এর বাইরে – নাটকের কথা। কিংবা বহু বছর আগে সেন্টমার্টিনে আহ‌্ছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের দুঃখজনক মৃত্যুর কথা। আজ বলবো কিছু কথা সেই বিষয়েই।

যদি সেন্টমার্টিন এর ম্যাপ দেখেন আর যে প্রান্তে সর্বাধিক মৃত্যু ঘটে তা দেখেন তবে দেখবেন, সেন্টমার্টিনের মাথা বা কোনার দিকের এই ঘটনা বেশি ঘটে। বিস্তারিত ২ নাম্বার ছবিতে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের একটা ছবি যেইটায় একটা কোনার মত অংশ বেরিয়ে আছে।

বাংলাদেশের সাথে পৃথিবীর অন্য সৈকতের মানুষ মারা যাওয়ার একটা পার্থক্য হলো, ভাটার সময় কোন দেশে আপনাকে নামতেই দিবেনা। কিন্তু, বাংলাদেশে অনেক মানুষ, ভাটার সময় পানিতে নেমে ভেসে যায়, এই অজ্ঞানতার কারনে অনেক জীবন বিনষ্ট হচ্ছে। এই জন্যে কক্সবাজার বা কুয়াকাটায় যাওয়ার আগে গুগল করে। জোয়ার ভাটার সময় জেনে যেতে পারেন।

ভাটার সময় মানুষের ভেসে যাওয়া বাদেও আর একটা বিপদজনক ইস্যু আছে। যেটা সম্পর্কে আমাদের সচেতনতা অনেক কম।

একে বলা হয়, রিপ কারেন্ট। সোজা বাংলায় আমরা সুবিধার জন্যে এর নাম দিতে পারি উলটো স্রোত।

সমুদ্র সৈকতে ৮০% মৃত্যু এই রিপ কারেন্ট বা উলটো স্রোতের জন্যে হয়। এমনকি অস্ট্রেলিয়াতেও প্রতি বছর গড়ে ২২ জন মারা যায় রিপ কারেন্টের কারণে।

আমাদের দেশেও সমুদ্র সৈকতে যেই সব মৃত্যু হয়, তার বেশীর ভাগ এই রিপ কারেন্টের জন্যেই হওয়ার কথা। এবং সেন্টমার্টিনের মাথার দিকে যে সরু অংশ তাও রিপ কারেন্টের একটা বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে।

রিপ কারেন্ট বা উলটো স্রোতঃ
এইটা এক ধরনের ঢেউ যা সমুদ্রের তটে ধাক্কা খেয়ে, উলটো দিকে প্রবাহিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে, এই ধাক্কা খেয়ে ফিরে যাওয়া ঢেউ বাতাসের কারনে বা প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে চিকন একটা পথ ধরে, সমুদ্রে ফিরে যেতে পারে। এবং এর ফলে সেই সরু পথে যদি কেউ থাকে তবে ঢেউ তাকে ধাক্কা দিয়ে গভীর সমুদ্রে নিয়ে ফেলতে পারে। এই সরু পথের ঢেউটাকেই বলা হয়, রিপ কারেন্ট বা উলটো স্রোত।

আমি রিপ কারেন্টের কিছু ছবি দিচ্ছি ছবি ৩, ৪,৫

এইটা যে কোন স্থানে হতে পারে। যে কোন সমুদ্রে হতে পারে, কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারনে নিয়মিত রিপ কারেন্ট বা উলটো স্রোত নিয়মিত হতে পারে।

কিভাবে রিপ কারেন্ট বা উলটো স্রোত চিনবেন ?
রিপ কারেন্ট বা উলটো স্রোতের একটা ভয়ঙ্কর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এইটা দেখতে মনে হয় খুব শান্ত। এবং উপর থেকে একে গাঢ় নীল দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে রিপ কারেন্ট বা উলটো স্রোতের সময়ে দেখবেন কিছু না কিছু ভেসে সাগরের দিকে যাচ্ছে বা আশে পাশের ঢেউ এর মধ্যে ঢেউ এর মাথা দেখা যাচ্ছে না। ছবিগুলো খেয়াল করেন, রিপ কারেন্ট যখন প্রবাহিত হয় তখন সে ফেরার পথে ঢেউয়ের মাথা ভেঙ্গে দেয়।

ফলে সেই স্থানটা বেশী শান্ত দেখায়।

উলটো স্রোতে কিভাবে বাঁচতে হবে ?
যারা সাঁতার জানেন তারা রিপ কারেন্টে পড়লে, উলটো দিকে তীরের দিকে না গিয়ে সৈকতের সমান্তরাল ভাবে উলটো স্রোত থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, সাগরের স্রোত যখন টান দিবে তখন শক্তি দিয়ে স্রোতের বিপরীতে ফেরা যাবেনা।

কয় ধরনের রিপ কারেন্ট আছে ?
তিন ধরনের রিপ কারেন্ট আছে। একটা ফিক্সড আর একটা হঠাৎ আর একটা টপোগ্রাফিক যার মধ্যে অন্যতম একটা হচ্ছে হেডল্যান্ড এর কারনে রিপ কারেন্ট। ফিক্সডটা হয় কিছু কিছু এলাকায় যেমন যেইখানে ব্রিজ আছে, যেইখানে কোন গভীর গর্ত আছে। হঠাৎ যেইটা হয়, সেইটা যে কোন জায়গায় বাতাসের কারনে হতে পারে।

সেন্ট মার্টিনের এই অংশটা একটা হেডল্যান্ড বৈশিষ্ট্যের এলাকায় যেইখানে রিপ কারেন্ট ঘন ঘন হবে প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে। [ছবি ৫]

কারণ বাতাসের কারণে দুই দিকের পানি ধাক্কা দিয়ে এর মাথায় বা তার দুই পাশেই একটা রিপ কারেন্ট তৈরি করতে পারে। এইটা একটা মৃত্যুফাঁদ। এইখানে প্রাকৃতিক অবস্থানের কারণে অনেক বড় বড় চ্যানেল তৈরি হয়েছে যেইগুলো দিয়ে ঘন ঘন উলটো স্রোত বা রিপ কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার চান্স বেশী। যা শান্ত পানি দেখে নামা পর্যটকদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তাই অবশ্য জেটি ঘাটে নেমেই উত্তরের বিচে ছবিতে চিহ্নিত স্থানে ভুল করেও নামতে যাবেন না। যদিও সেন্টমার্টিন এর পানিতে নামার জন্য সব থেকে আকর্ষণীয় বিচ উত্তর বিচ। কিন্তু উত্তর-পূর্বের এই অংশেই আছে ভয়ংকর রিপ কারেন্ট। সেন্ট মার্টিনের এলাকাবাসি জানে এই এলাকায় সাঁতার কাটতে নাই। তাই সামনে কাউকে দেখলে এরা মানা করে। কিন্তু সেইটা সবার জানার সুযোগ হয় না। এই ভাবেই সামান্য অসাবধানতার কারণে অনেক পর্যটক মারা যায়।

সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে হেডল্যান্ড ধরনের টপোগ্রাফিক রিপ কারেন্ট কিন্ত নিয়মিত একটা বৈশিষ্ট্য। এই স্থানে যদি একটা মৃত্যুও ঘটে আমরা তাকে দুর্ঘটনায় বলতে পারিনা। এইগুলো হয় আত্নহত্যা নয়তো হত্যার পর্যায় পড়ে। কারন আমাদের সকলের উচিত এসকল স্থান সম্পর্কে জানা ও অন্যকে জানানো। যাতে না জানার জন্য আর কোন মৃত্যু না হয়।

বলে রাখা ভালো রিপ কারেন্ট পৃথিবীর সব সৈকতে হয় এবং এই জন্যে সতর্কতা নিতে হয়। রিপ কারেন্টের ভয়ে সমুদ্রযাত্রা বন্ধ করার দরকার নাই। কিন্তু সতর্কতা গুলো নিতে হবে।

দেশবাসী ট্যুরে যান, ট্রেকিং এ যান। যেখানে মন চায় যান, যেভাবে মন চায় যান। কিন্তু প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছুই করবেন না প্লিজ।

লেখা ও ছবি সংগৃহীত

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category

© All rights reserved © 2025 Coder Boss

Design & Develop BY Coder Boss