বিমানবন্দরে ৫ প্রবাসীকে নিরাপত্তারক্ষীদের মা’র ধরের ঘটনার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে শাস্তি মূলক ব্যবস্থার দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন-বিএইচআরএফ
মানবাধিকার প্রেস রিলিজ :- গতকল্য ৮/১/২৫ বুধবার রাতে শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে ৫ প্রবাসী শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতি দৃষ্টিগোচর হলে এতে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন। বিএইচআরএফ চেয়ারপার্সন এডভোকেট এলিনা খান ও মহাসচিব এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান মানবাধিকার লংঘনের এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান ও দায়ী ব্যাক্তিদের বিলম্ব না করে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে এবং আহত ভিকটিমদের সূচিকিৎসা ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরন দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।হেনস্থার শিকার যাত্রীরা অপরাধ করলে তাদের আইের কাছে সোপর্দ না করে তাদের শারীরিক মানসিক নির্যাতন একটি গুরুত্বর শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নরওয়ের চারজন এবং বাংলাদেশের এক নাগরিককে হেনস্তা করা হয়েছে এবং এর মধ্যে নরওয়ের একজনকে মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়েছে মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিএইচআরএফ এ ব্যাপারে আইনী পদক্ষেপ গ্রহনের ঘোষনা দেয় এবং এ ব্যাপারে আইনী পদক্ষেপ নিতে সরকারকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা করে । বিমানবাহিনীর কুইক রেসপন্স ফোর্স (কিউআরএফ) এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার রাত আটটার দিকে বিমানবন্দরের আগমনী ক্যানপি-২ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।বিমানবন্দরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর একটি সূত্র জানায়, মারধরের শিকার যাত্রীর নাম মোহাম্মদ সাইদ উদ্দিন। অন্য চারজন হলেন সাইদের বাবা গিয়াস উদ্দিন, মা বেগম মনোয়ারা, ভাই মোহাম্মদ মহি উদ্দিন এবং গিয়াস উদ্দিনের পুত্রবধূ ইপসা জান্নাতুল নাঈম। এই পাঁচজনকেই হেনস্তা করা হয়েছে। নরওয়ের নাগরিকদের হেনস্তা, একজনকে মারধরের ঘটনা মানবাধিকারের চরম লংঘন। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাঁকে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। শারীরিক নির্যাতন মারাত্মক শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চারজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নরওয়েজিয়ান নাগরিক ও একজন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রতি হেনস্তা এবং শারীরিক হামলার ঘটনায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বিচার দাবী করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। অভিযোগে জানা গেছে , বিমানবাহিনীর কুইক রেসপন্স ফোর্স (কিউআরএফ) এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যার ফলে মোহাম্মদ সাইদ উদ্দিন নামক একজন যাত্রী মারধরের শিকার হয়ে রক্তাক্ত হন।এই ঘটনা বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১-এর লঙ্ঘন, যা আইনের সুরক্ষা এবং আইনের অধীনে সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করে। একইভাবে, এই ঘটনা অনুচ্ছেদ ৩৫-এর অধীনে নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর আচরণ নিষিদ্ধ করার বিধানও ভঙ্গ করেছে। এছাড়া, এই ধরনের আচরণ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেরও বিরোধী, যেমন বিশ্ব মানবাধিকার ঘোষণা (UDHR) এর অনুচ্ছেদ ৫ এবং আন্তর্জাতিক বেসামরিক ও রাজনৈতিক অধিকার কনভেনশন (ICCPR) এর অনুচ্ছেদ ৭, যা বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্র হিসাবে মান্য করতে বাধ্য।এই অপরাধের শিকার ব্যক্তিরা তাদের ক্ষতির জন্য পূর্ণ এবং সুবিচারমূলক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী। উপরন্তু, অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত এবং শাস্তি প্রদান করা উচিত।
এই লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএইচআরএফ সরকারের প্রতি নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে:
১.৪৮ ঘন্টার মধ্যে দায়ী রক্ষীদের প্রত্যাহার,সাময়িক বরখাস্ত করা।
২. একটি স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ তদন্ত চালানো, যাতে সমস্ত অপরাধীকে, তাদের পদমর্যাদা বা সংস্থার সদস্য পরিচয় যাই হোক না কেন, যথাযথভাবে দণ্ডিত করা হয়।
৩. ভুক্তভোগীদের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন প্রদান করা, যা বাংলাদেশের সংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাসমূহের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
৪. বিমানবন্দর নিরাপত্তা কার্যক্রমে প্রশিক্ষণ প্রদান করে মানবাধিকার, পেশাদার আচরণ এবং আইনের শাসনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বিষয়টি নিশ্চিত করা।
৫. সরকারি দুঃখ প্রকাশ করে ভুক্তভোগীদের সম্মান পুনরুদ্ধার করা এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসী সম্প্রদায়ের আস্থার পুনর্স্থাপন করা।
বিএইচআরএফ বাংলাদেশে সকল ব্যক্তির, বিশেষ করে প্রবাসী সম্প্রদায়ের, অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষার প্রতি প্রতিশ্রুতি ক্ষুন্ন করে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জনগণের আস্থা কমিয়ে দেয়। এই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
সংবাদ প্রেরক :
জিয়া হাবীব আহসান এডভোকেট মোবাইল নং ০১৭১৩৪৮৭৪৯৬
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.