বিশেষ প্রতিবেদন : এসএমটিভি :
ফুচকা এমন এক মুখোরোচক খাবার, যার নাম শুনলেই অনেকের জিভে পানি চলে আসে। তাই খাওয়ার সময় অনেকেই এই মজাদার খাবারের গুণগত মান বিচার করে দেখি না আমরা। চট্টগ্রামে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ফুচকা বিক্রয়ে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।
টক-ঝাল-মিস্টি আর কুড়মুড়ে একটা ফুচকা মুখে পুরতেই যেন কি স্বাদ! আহা! কী তৃপ্তি! কী মজা! কী সুস্বাদ! নাম শুনলেই জিভে জল আসে। নগরীর স্কুল-কলেজের সামনে, অলিতে-গলিতে, মোড়ে-মোড়ে এই লোভনীয় খাবারের পসরা সাজিয়ে বসে থাকেন ফুচকাওয়ালারা। কিন্তু কিভাবে তৈরী হচ্ছে এই ফুচকা? নোংরা পরিবেশের কথা না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু খালি গায়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ফুচকা বানান কারিগররা। শরীরের ঘামও পড়ছে সেখানে।
নগরীতে গড়ে উঠেছে অবৈধ ফুচকার কারখানা। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের মাঝে নগরীতে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স না নিয়ে অবৈধ ফুসকা কারখানায় উৎপাদন চলছে। নগরীর বাকলিয়া, লালদিঘি, স্টেশন রোড, চকবাজার, বন্দরসহ সব বিনোদন কেন্দ্র, ফুটপাত ও দকল এলাকায় বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স না নিয়ে অবৈধভাবে ফুচকা তৈরির কারখানা চালিয়ে যাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এসব ফুসকা বাজারে বিক্রি হয়ে আসছে। যার ফলে ভোক্তারা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
নগরীর সবচেয়ে বড় ফুচকার হাট হচ্ছে সীবিচ খ্যাত পতেঙ্গা, নেভাল, অভয়মিত্রঘাট, আন্দরকিল্লার এক মোড় থেকে ওপর মোড় পর্যন্ত দুই পাশের ফুটপাত দখলে নিয়েছে ফুচকাওয়ালারা। নগরীর স্টেশন রোড আর নতুন ব্রিজের পাশেও একি পরিবেশ। সেই স্থানগুলোতে পথচারীদের চলাচলের জন্য নির্মিত ফুটপাতে চেয়ার বসিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় চলাচল। আর ফুচকাসহ নানা দোকান ব্রিজে যানবাহন চলাচলের স্থানে বসানোর কারণে সড়ক শুরু হওয়ায় প্রায়ই ঘটছে দূঘটনা। ব্রিজে দুর্ঘটনার আরো কয়েকটি কারণ উল্লেখযোগ্য, কিছু উচ্ছৃঙ্খল তরুণ হাইড্রলিক বাইসাইকেল কেউ আবার মোটরসাইকেল দিয়ে বিভিন্ন ম্যাজিক প্রদর্শনের কারনেও দুর্ঘটনা ঘটছে। ‘সেলফি ব্রিজ’ খ্যাত নতুনব্রিজ সহ বিভিন্ন স্থানের ফুচকার দোকানগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, স্পাইসি ফুচকা, ভাই ভাই ফুচকা, শাওন চটপটি ও ফুচকা, মাহিয়া চটপটি, ডিজিটাল চটপটি ও ফুচকা, অলি চটপটি এন্ড ফুচকা হাউজ, ইতি ফুচকা, ইতি ও স্মৃতি চটপটি ও ফুচকা, মুন্না চটপটি, হাফসা চটপটি, সাদিয়া চটপটি, স্পাইসি ফুচকা ২ ও বিসমিল্লাহ স্পেশাল চটপটি সহ অসংখ্য দোকান ১৫ থেকে ৩০টা পর্যন্ত চেয়ার বসিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা। নগরীর অসংখ্যা স্থানে রয়েছে নামে-বেনামে ফুচকার দোকান।এই বিষয় নিয়ে কথা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিয়োজিত ডাক্তার ফারজানা শারমিনের সাথে, তিনি বলেন, যে স্থানের ফুচকা তৈরি ও যে স্থানে বসে বিক্রয় করা হচ্ছে এবং কি দিয়ে তৈরি হয় তা দেখা অত্যন্ত জরুরি। বর্তমান সময়ে ফুচকা তৈরি ও বিক্রয়ে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি। আর সেই কারণে জনস্বাস্থ্য পড়বে হুমকি মুখে। কারণ যে স্থানের ফুচকা তৈরি ও যে স্থানে বসে বিক্রয় করা হচ্ছে এবং যা কিছু দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে তার কোনো টাই স্বাস্থ্য সম্মত নয়।
লেখক : ডাক্তার ও সংঘটক।