বিবাহিতা নারীরা যখন প্রেমে পড়েন, তখন তাঁরা ঠিক ততটাই প্রেমময় হন, যতটা প্রেমময় হয় কুমারী মেয়েরা। প্রেম তো বিবাহ বা কুমারীত্ব বোঝে না, সে দেখে শুধু মনের আয়না, শুনে হৃদয়ের রাগ-রাগিণী।
বিবাহিতা নারীরাও, সমাজের চোখ রাঙানি এড়িয়ে, করে যান প্রেম—একটি অমর লতার মতো।কারণ প্রেমের বীজ কেউ বোনে না, তা নিজেই হঠাৎ হৃদয়ের ভেজা মাটিতে অঙ্কুরিত হয়।
প্রেমে পড়ে, তারা হয়ে ওঠে আবার সেই সতেরো-আঠারো বছরের তরুণী। উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠে মন, প্রেমিকের এক ঝলক দেখার জন্য। দেহের বাসনাকে ছাপিয়ে, তাদের প্রেম খুঁজে পায় আত্মার সুখ। প্রেমিকের একটি আলিঙ্গনে তারা ডুবে যায় এক অপার্থিব আনন্দে।
তারা ভুলে যায় নিজেদের সকল দুঃখ, প্রেমিকের চোখের গভীরে ডুব দিয়ে। তার প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি হাসি, তাদের করে তোলে এক মীরার মতো। মনের তারে বেজে ওঠে এক সুর, যা ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাদের।
প্রেমিকের একটি ডাকেই, সতরোটি বসন্ত যেন তাদের হৃদয় জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তারা ফুটে ওঠে পলাশ ফুলের মতো, আবিরের লাল রঙে। তাদের আনন্দ খেলা করে বসন্তের হলুদ সরষে ফুলের মতো।
তবু, তারা চায় না সমাজের কোনো কলঙ্ক। তারা চায় না, কেউ তাদের ”কুলটা” বলে, তাদের প্রেমকে অপমান করুক। তারা চায় সেরা মা হতে, চায় আদর্শ স্ত্রী হয়ে থাকতে। তারা গৃহস্থ জীবনের দায়িত্বে কখনো পা বাড়ায় না পিছু হটার দিকে।
তবু, মনে মনে তারা রয়ে যায় সেই নারীতেই। যে ভালোবাসা দিতে জানে,
সেই কুমারী মেয়েটির মতোই, যে তার বাবার মেয়ে, ভাইয়ের আদরের বোন। তারা চায় প্রেমিকের প্রত্যেক ব্যথা লুকিয়ে রাখতে নিজেদের আঁচলে।প্রার্থনার প্রতিটি মুহূর্তে চায় তার সুখের আশীর্বাদ।
কিন্তু কুমারীদের মতোবতাদের প্রেমের স্বপ্নের কোনো পূর্ণ ঠিকানা থাকে না। তারা জীবন চালায় এক অদ্ভুত ভারসাম্যে—এক চাকার গৃহস্থ জীবন, আর এক চাকার প্রেম।
নীরব রাতে, নিঃসঙ্গতার ছায়ায়, তারা স্বামীর পিঠে দেখে প্রেমিকের মুখ। তারা চায় প্রেমিকের সান্নিধ্যে, জীবনের প্রতিটি কঠিনতায় খুঁজে পেতে শান্তির এক টুকরো ছায়া।
কুমারী মেয়েরা প্রেমিকের সঙ্গে বেঁধে নিতে চায় সংসার। আর বিবাহিতা নারীরা, প্রেমিককে হারাতে চায় না। তারা বাঁধা পড়তে চায় বিশ্বাসের ডোরে, গ্লানির আগুনে প্রেম উৎসর্গ না করে, তারা নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসতে থাকে—বিশ্বের সকল প্রেমিকাদের মতোই। Rokiy Vai
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.