নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানার জনবসতিপূর্ণ এলাকা মিয়াখান নগর থেকে শুরু করে নগরীর প্রায় সকল জায়গাতেই রয়েছে আবাসন প্রকল্প। ওই এলাকায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন বসত-বাড়ি, শিক্ষা, সংস্কৃতিক-সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। গুরুত্বপূর্ণ ওইসব এলাকায় হঠাৎ করে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনের (চসিক) ময়লা ফেলা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে অবগত নয় চসিক।
ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে এলাকায় টিকতে পারছে না এলাকার লোকজন। অনেকে বাসা ছেড়ে চলে গেছে অন্যত্র। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এলাকার একটি সন্ত্রাসী চক্র জায়গাগুলো অবৈধভাবে দখল নিতে চেয়েছিল। না পেরে, চসিকের পরিছন্নতা বিভাগের অসাধু কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় বানিয়ে এলাকাবাসীকে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করার কৌশল নিয়েছে। সরজমিনে দেখা যায়, জালালাবাদ আরেফিন নগর বাজারের রাস্তার পশ্চিম ও উত্তর পাশে চসিকের গাড়ি ব্যবহার করে ময়লা ফেলা হচ্ছে। দীর্ঘ এলাকাজুড়ে ময়লা ফেলার কারণে এলাকাটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লার দুর্গন্ধে সড়কটি দিয়ে হাঁটাচলা করতে দুর্ভোগে পড়ছে এলাকাবাসী। ছোট ছোট শিশুরা স্কুল-কলেজে যেতে নাকে-মুখে হাত দিয়ে পথ চলছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জমানো ময়লা-আবর্জনা স্তূপ হয়ে পড়ে আছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নাসিরাবাদের বড় ভাই নামে খ্যাত মহিউদ্দিন, দিদার, মিল্টন গ্রুপের ক্যাডাররা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে নানা অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দলে কালা সোহেল, গোপি জলিল ও বোমা জাহাঙ্গীরসহ শতাধিক সন্ত্রাসী রয়েছে। তারা চাঁদাবাজি, ভূমিদখল এবং নানা অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকায় নতুন বিল্ডিং বা দোকানপাট থেকে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। ওই সন্ত্রাসী চক্রটি আরেফিন নগর বাজারের সংলগ্ন সড়কের পশ্চিম ও উত্তর পাশের লোকজনকে বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। চলে না যাওয়ায় লোকজনের বসতঘরে, দোকান পাটের সামনে ময়লা ফেলে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় একটি স্কুলের ছাত্রী তানিয়া তাবাসুম, আইরিন ও মিথিলা জানায়, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে বাসায় টিকে থাকা দায়। স্কুলে যেতে দুর্গন্ধের কারণে খুব কষ্ট হয়। মোহাম্মদ আলমগীর নামে এক ভুক্তভোগী জানান, গত ২৫ নভেম্বর রাত আড়াইটায় একদল সন্ত্রাসী চসিকের ময়লা আবর্জনার গাড়ি নিয়ে তার দশটি আধা পাকা বাসার উপর ময়লা ফেলে। এ সময় তার বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে ঘরের মধ্যে ময়লার স্তূপ করে রাখে। একইভাবে ওই এলাকার আব্দুল ওহাব, মোহাম্মদ জিয়া, সার্জেন্ট আবুল কাশেম, মোহাম্মদ আলী, শাহজাহান, মহিউদ্দিন, কালাম, সিরাজ, জামাল, রফিক, খালেক, মোহাম্মদ তাহেরের ঘরের সামনে রাতের আন্ধকারে প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে ওই এলাকা দিয়ে হাঁটা যায় না। এলাকাটি আবর্জনায় ভরে গেছে। কিন্তু কখনো এই আবর্জনা পরিষ্কার করা হয় না।
চসিকের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা জানান, ওই এলাকায় ময়লা-আবর্জনা রাখার ব্যাপারে চসিক অবগত নয়। এলাকার কিছু সন্ত্রাসী প্রতি রাতে এলাকায় ময়লা ফেলে স্তূপ করে রেখেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। চসিকের কিছু পরিচ্ছন্নতাকর্মী এতে জড়িত বলে খবর পেয়েছেন। এ ব্যাপারে থানায় জানানো হয়েছে। পুলিশ জড়িতদের ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে।