নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকনাফ :
মঙ্গলবার বিকালে সেন্ট মার্টিন উপকূলে সাগরে মাছ ধরতে যাই। রাতে জাল ফেলে ভোরে তোলার সময় দেখা গেল, প্রচুর মাছ। ৭-৮ ঘণ্টার মধ্যে এতগুলো মাছ ধরা পড়বে তারা কল্পনাও করেননি। পরে আর জাল না পেলে মাছগুলো নিয়ে তারা ঘাটে চলে যান। জেটিঘাটে মাছগুলো দেখার জন্য পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন ভিড় জমান। কথাগুলো বলেন খুশিতে আত্মহারা হোসেন মাঝি।
কক্সবাজারের টেকনাফে জেলেদের এক জালে ৯১০টি চাপা সুরমা মাছ ধরা পড়েছে; মাছগুলো বিক্রি হয়েছে চার লাখ ৯০ হাজার টাকায়। মাছগুলো ধরা পড়েছে সাগরের শাহ পরীর দ্বীপ ডেইলপাড়া এলাকার আবদুল গফুর আলমের মালিকানাধীন হোছেন মোহাম্মদসহ নয় মাঝি-মাল্লার জালে।
বুধবার বিকালে সাড়ে ৪টার দিকে টেকনাফ উপজেলার শাহ পরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের ফিশারিতে এফবি গফুর নামে ট্রলার থেকে ছোট বড় ৯১০টি মাছ তোলা হয়।
ট্রলার মালিক গফুর আলম বলেন, “জালে ধরা পড়া ৯১০টির মধ্যে ছোট প্রতিটি মাছের ওজন দেড় কেজি থেকে দুই কেজি। এ ছাড়াও সাড়ে ৬ কেজি থেকে ৮ কেজি ওজনের ৫০টি মাছ রয়েছে। মোট মাছের ওজন হল এক হাজার ৬৫০ কেজি।” মাছগুলো বিক্রি ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।
মৎস্যব্যবসায়ী ছৈয়দ আলম বলেন, “বর্তমানে পর্যটন মৌসুম চলছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকেরা কক্সবাজারে বেড়াতে আসছেন। খাবারের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে এই সব মাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বিক্রির জন্য মাছগুলো বরফ দিয়ে প্যাকেটিং করে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে।”
টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, শাহ পরীর দ্বীপে এক জালে ‘প্রচুর’ চাপা সুরমা মাছ ধরা পড়ার খবর তিনি শুনেছেন। সামুদ্রিক মাছের মধ্যে চাপা সুরমা খুবই সুস্বাদু দাবি করে তিনি বলেন, “সাগরের যে এলাকায় প্রবাল রয়েছে, এসব মাছ সেখানে বিচরণ করে।” তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছ ও ইলিশের প্রজনন বাড়াতে প্রতি বছর ৬৫ দিন মাছ ধরা ও বিপণনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। ফলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রজনন ও আকৃতি বেড়েছে অনেক গুণ। এর সুফল হিসেবে শাহ পরীর দ্বীপ উপকূলের জেলেদের জালে বড় ও ছোট প্রজাতির প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে বলে দাবি তার।