নিজস্ব প্রতিবেদক :
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) টাইগারপাসের চসিক কার্যালয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রামের গণপরিবহন খাতের নেতারা অভিযোগ করেন, পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড না থাকায় বাস-ট্রাকগুলো অনিরাপদভাবে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে। অনেক সময় এজন্য মামলার কারণে হয়রানি হতে হয় গণপরিবহন সংশ্লিষ্টদের। এজন্য দ্রুত বাস টার্মিনাল ও বাস স্ট্যান্ড নির্মাণ প্রয়োজন। তারা বলেন, নগরকে যাত্রীসাধারণ, ব্যবসায়ী পর্যটকদের জন্য টার্মিনালের সুবিধা দিতে পারলেই এই নগর বাণিজ্যিক নগর হিসেবে স্বীকৃতির পাশাপাশি সব ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। বন্দর ব্যবহারকারীদের তথা আমদানি-রপ্তানিকারকদের আগমন-নির্গমন সুগম হবে। ব্যবসায় গতি আসবে, প্রতিদিন যাত্রী পরিবহন বাড়বে। নগর প্রাণবন্ত হবে, ব্যবসায়িক লেনদেন ও কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে। টার্মিনাল ব্যবহারকারী গণপরিবহন চলাচল বাড়লে চসিকের আয়ও বাড়বে। নগরে চলাচলরত যানবাহনের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় স্থানে স্থানে পার্কিং এরিয়া ঘোষিত কিংবা সুনির্দিষ্ট করার অভাবে যত্রতত্র নো-পার্কিংয়ের অপরাধে উচ্চহারে ফাইন/পেনাল্টি আরোপ ও হয়রানি বন্ধ করা ন্যায় বিচারের স্বার্থে একান্ত প্রয়োজন। অনতিবিলম্বে নগরের সব প্রান্তে/ সড়কে পার্কিং এরিয়া এবং নো-পার্কিং এরিয়া নির্দিষ্ট করা, পার্কিং ও নো-পার্কিং বিভাজন সৃষ্টি না করে এবং এ বিভাজনকে সব পরিবহন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে মামলা প্রদান, জরিমানা কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়। বৈষম্য সৃষ্টি বা দাপট প্রদর্শন অন্যায়ের শামিল। জরিমানা, ফাইন ও পেনাল্টির বৈষম্য সৃষ্টি করে ঢাকা মেট্রো ও চট্টগ্রাম মেট্রোকে আলাদা করা হয়েছে, চট্টগ্রামে চলাচলরত যানবাহনের ওপর আরোপিত জরিমানা ঢাকায় চলাচলরত যানবাহনের দ্বিগুণ, কেন কী কারণে এই বৈষম্য আরোপ করে মালিকদের তা জানা নেই। এই বৈষম্য অচিরেই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরের যানজট নিরসনে চলতি বছরের মধ্যেই কুলগাঁওতে বাস টার্মিনাল ও বাকলিয়ায় মিনি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করব ইনশাআল্লাহ। আমি কথা চাই না, কাজ চাই। আমি চাই যানজট নিরসন হোক, জনগণ স্বস্তিতে চলাচল করুক। এজন্য কুলগাঁও বাস টার্মিনাল করা প্রয়োজন। এ ছাড়া বাকলিয়াতে মিনি বাস টার্মিনালও নির্মাণ করা যেতে পারে। এটা যখন আমি উদ্বোধন করতে পারবো, তখনই বলব এটি আপনাদের জন্য উপহার। তিনি স্টেকহোল্ডারদের উদ্দেশে বলেন, তারা যেন পাঁচ-ছয় জন প্রতিনিধি নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কীভাবে গণপরিবহন খাতের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়ে বাসচালকদেরও মতামত নেওয়ার নির্দেশনা দেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা অধ্যাপক কফিল উদ্দীন আহমদ, কফিল উদ্দীন, আহ্বায়ক মোরশেদুল আলম কাদেরী, উপদেষ্টা একরামুল করিম চৌধুরী, মোহাম্মদ মুছা, অলি আহম্মদ, মৃণাল চৌধুরী, আহসানুল্লাহ চৌধুরী, ফারুক খান, মো. জাফর, মো. মনসুর রহমান, নুরুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান, মো. জাফর, মো. খোরশেদ, মো. শাহজাহান, মো. মাহবুব, মো. জাহাঙ্গীর, কামাল উদ্দিন, আলী চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন, মোহাম্মদ আজম, মো. রায়হান, মো. হারুন, আনোয়ার প্রমুখ।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের জানানো দাবির মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম থেকে উত্তরগামী তথা ঢাকা অভিমুখী যাত্রীসাধারণের আগমন-নির্গমন ব্যবস্থার পরিকল্পনার আওতায় উত্তরগামী বাস ও অন্যান্য যানবাহনের জন্য আধুনিক, মানসম্মত পরিবেশ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মাণ; চট্টগ্রাম-হাটহাজারী, নাজিরহাট, রামগড়, খাগড়াছড়ি, রাউজান ও রাঙামাটি অঞ্চলের জন্য আধুনিক মানসম্মত টার্মিনাল নির্মাণের কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অভিমুখী যাত্রীসেবা আরও গণমুখী করার লক্ষ্যে শাহ আমানত সেতুর উত্তর পাশে পরিকল্পিত টার্মিনাল নির্মাণ, চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালকে আধুনিক করা; চট্টগ্রাম-কাপ্তাই অভিমুখী বাস চলাচল নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে বর্তমান টার্মিনাল সংস্কার ও বর্ধিত করা; মেট্রোপলিটন এলাকায় চলাচলরত যাত্রীবাহী বাস মিনি বাস হিউম্যানহলারের জন্য এলাকা ভিত্তিক টার্মিনাল/ বে-টার্মিনাল নির্মাণ পার্কিং নির্দিষ্ট করা।
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.