ফটিকছড়ি প্রতিনিধি :
বাগান বাজারে নিহত দুলায়েত হোসেনের পরিবারকে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য খুনিরা হুমকি দিচ্ছে জানিয়ে বিএনপি নেতা সরওয়ার আলমগীর বলেন, মামলা প্রত্যাহার না করলে তাদের অবস্থাও দুলালের মতো হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পুরো ফটিকছড়িতেই এখন প্রায় একই অবস্থা। দলে অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়েছে জানিয়ে সরওয়ার আলমগীর বলেন, তাদেরকে বিভিন্নভাবে পদায়ন করা হচ্ছে। তারাই দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও বলেছেন- আমাদের দলের কেউ যদি এ জাতীয় ভুল করে তাহলে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, আমাদেরও তাই হবে। তিনি বিএনপির নাম বিক্রি করে সন্ত্রাসের সাথে জড়িতদের অনতিবিলম্বে বহিষ্কার করতে উপজেলা কমিটির নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। কিছুদিন আগে বাগান বাজার ইউনিয়নে নিজের কৃষি জমি থেকে মাটি কাটতে বাধা দেওয়ায় ভূমিদস্যুদের হামলায় নিহত হন দুলায়েত হোসেন দুলাল। কয়েকদিন আগে দাঁতমারায় নিহত হয় শহীদুল ইসলাম। আরও কিছুদিন আগে নিহত হয় আমান উল্লাহর মেয়ে তাবাসসুম।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার আলমগীর বলেছেন, ফটিকছড়ি আবারও সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য হয়ে উঠছে। চুরি-ডাকাতি, খুন, রাহাজানিসহ তাণ্ডব চলছে। অথচ প্রশাসন অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় ফটিকছড়ির বিবিরহাটে বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, কয়েকজন ‘বিশেষ ব্যক্তির’ লোকজন খালের বালু তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বাগানের কাঠ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এমন কোনদিন নাই চোরাই রাবার ফটিকছড়ি থেকে পাচার হচ্ছে না। ফটিকছড়ির বন উজাড় করে দিচ্ছে, পাহাড়ের মাটি কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলছে। অনতিবিলম্বে এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করার অনুরোধ করছি। যদি এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করা হয়, তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
সংবাদ সম্মেলনে ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল আলম, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আবুল কালাম, উত্তর জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব নাজিম উদ্দিন শাহীন, জেলা বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন আজম তালুকদার, উত্তর জেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন, ফটিকছড়ি পৌরসভা বিএনপির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বজল আহমদ, উত্তর জেলা যুবদলের সহ সভাপতি মনসুর আলম চৌধুরী, নুর আলম মেম্বার উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ফটিকছড়ির ভূজপুরে আগুনে পুড়েছে ১১টি দোকান। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে কাজিরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আগুনে পুড়ে গেছে রঞ্জিতের মিষ্টির দোকান, আবু সওদাগরের চালের দোকান, তসলিমের কুকারিজ দোকান, আলমগীরের গাছের দোকান, তসলিমের লেপ-তোষকের দোকান, আনসারের হোটেল ও চা দোকান, আব্বাসের ওয়ার্কশপ ও পানের দোকান, তাহেরের স্টিলের দোকান, সেলিমের বিসমিল্লাহ হোটেল ও নুরুল ইসলামের ওয়ার্কশপ।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে হঠাৎ আগুন লেগে এসব দোকান পুড়ে যায়। প্রায় ৪ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। ভূজপুরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শফি বলেন, ১১টি দোকান পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এছাড়াও ২০টির অধিক দোকান আংশিক পুড়ে গেছে। কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি ইউএনওকে জানিয়েছি।