আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডকে ‘কিনে নেওয়া ও মালিকানা নেওয়ার’ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে তার বিতর্কিত প্রস্তাব পুনরায় তুলে ধরে ফিলিস্তিনের গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, গাজাকে একটি ‘বড় রিয়েল এস্টেট সাইট’ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোকে এর পুনর্গঠনের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। খবর আল জাজিরার।
নিউ অরলিন্সে সুপার বোলে যোগ দেওয়ার পথে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যদি গাজা পুনর্গঠনের কথা ভাবি, তাহলে এর বিভিন্ন অংশ নির্মাণের দায়িত্ব মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর হাতে তুলে দিতে পারি। অন্যরাও আমাদের তত্ত্বাবধানে এটি করতে পারে। কিন্তু আমরা এটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা নিশ্চিত করব হামাস যেন ফিরে আসতে না পারে। আসার মতো কিছুই নেই— সেটি এখন এক ধ্বংসস্তূপ। যদি আমরা তাদের জন্য নিরাপদ কোনো বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি— তাহলে গাজায় ফেরার বিষয়টি তাদের কাছে আর গুরুত্বপূর্ণ থাকবে না। তারা ফিরে যেতে চায় শুধুমাত্র বিকল্পের অভাবে। যখনই তাদের বিকল্প থাকবে, তারা গাজায় ফিরতে চাইবে না, বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ‘বিপ্লবী’ ও ‘সৃজনশীল’ বলে প্রশংসা করেছেন। ওয়াশিংটন থেকে ফেরার কয়েক ঘণ্টা পর এক মন্ত্রিসভা বৈঠকে তিনি এমনটি বলেন। যুক্তরাষ্ট্র সফরে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন দাবিতে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এর জবাবে হামাসের পলিট ব্যুরোর সদস্য ইজ্জত আল-রিশেক টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গাজা কোনো সম্পত্তি নয়, যা কেনা-বেচা করা যায়। এটি আমাদের দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ট্রাম্প এমন এক প্রস্তাব দেন যা ফিলিস্তিনিদের ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে হতবাক করে দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওয়াশিংটন গাজার নিয়ন্ত্রণ নিলে এবং পুনর্গঠন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে এটি ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’য় পরিণত হতে পারে।
পরদিন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার প্রস্তাবের পক্ষে আরও জোরালো অবস্থান নেন। এর আগে, তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন যে, ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসন হলে তা শুধুমাত্র সাময়িক হবে, কিন্তু তাতেও সমালোচনা কমেনি।