আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কারের এক শতাব্দীরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো কোনো ফারাওয়ের সমাধি আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা। রাজা দ্বিতীয় থুতমোসের সমাধিই ছিল মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের শেষ অজ্ঞাত সমাধি। ব্রিটিশ-মিসরীয় একটি প্রত্নতাত্ত্বিক দল মিসরের লাক্সর শহরের কাছে থেবান নেক্রোপলিসের পশ্চিম উপত্যকায় সমাধিটি খুঁজে পায়।
গবেষক দল সমাধিটি এমন এক স্থানে খুঁজে পায়, যা সাধারণত রাজপরিবারের নারীদের সমাধিস্থল হিসেবে পরিচিত। তবে, যখন তারা সমাধিকক্ষে প্রবেশ করে, তখন দেখতে পায় সেটি বেশ অলংকৃত— যা স্পষ্টতই ফারাওদের চিহ্ন। অভিযানের মাঠ পরিচালক ড. পিয়ার্স লিথারল্যান্ড বলেন, ছাদের একটি অংশ এখনো অক্ষত— নীল রঙের ছাদ, যার ওপর আঁকা ছিল হলুদ তারাগুলো। আর এমন নীল ছাদ ও হলুদ তারা শুধুমাত্র রাজাদের সমাধিতেই পাওয়া যায়। তিনি বিবিসির নিউজআওয়ার অনুষ্ঠানে বলেন, সমাধিটি খুঁজে পাওয়ার মুহূর্তে তিনি তীব্র আবেগে অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন।
এই গবেষক বলেন, এ ধরনের আবিষ্কারের মুহূর্ত একেবারে অভূতপূর্ব ও বিস্ময়কর। কারণ, যখন আপনি এমন কিছু খুঁজে পান যা আপনি কল্পনাও করেননি, তখন আপনার আবেগ প্রবলভাবে আলোড়িত হবে। তিনি বলেন, যখন আমি বাইরে আসি, দেখতে পাই, আমার স্ত্রী বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। আমি আর কিছু বলতে পারিনি। শুধু কান্নায় ভেঙে পড়ি।
লিথারল্যান্ড বলেন, এই আবিষ্কার অষ্টাদশ রাজবংশের প্রাথমিক ফারাওদের সমাধিগুলো কোথায় অবস্থিত সেই রহস্যের সমাধান করে দিয়েছে। গবেষকেরা দুই শতাব্দী আগে দ্বিতীয় থুতমোসের মমি খুঁজে পান। তবে মূল সমাধিস্থল আগে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
দ্বিতীয় থুতমোস দ্বিতীয় ছিলেন তুতেনখামেনের পূর্বপুরুষ। ধারণা করা হয়, তিনি খ্রিস্টপূর্ব আনুমানিক ১৪৯৩ থেকে ১৪৭৯ অব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। তুতেনখামেনের সমাধি ১৯২২ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিকরা আবিষ্কার করেছিলেন। দ্বিতীয় থুতমোস মূলত তার স্ত্রী রানি হাতশেপসুতের জন্য পরিচিত, যিনি মিশরের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং স্বীয় ক্ষমতায় শাসন করা বিরল নারী ফারাওদের একজন।
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.