1. admin2@dailysmtv24.com : admin :
  2. admin@dailysmtv24.com : admin :
বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে রোজার বিস্ময়কর উপকারিতা

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ, ২০২৫
  • ১৪ Time View
দীর্ঘায়ূ করতে রোজা রাখে বিরাট অবদান

ইসলাম ডেস্ক : 

পবিত্র মাহে রমজান রহমত, মাগফিরাত, নাজাতের মাস । রমজান মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে রোজা রাখা মুসলমানদের উপর ফরজ। পৃথিবীজুড়ে ১৬০ কোটি মুসলমান রোজার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কাছে নিজেদের নিবেদন করেন। তাঁদের এ আত্মনিবেদনের পেছনে থাকে না কোনো ইহলৌকিক চাওয়া। আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টিই কেবল চেয়ে থাকেন মুমিনরা। মহান আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন, মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, কিন্তু রোজা কেবল আমারই জন্য, আমিই নিজেই এর প্রতিদান দেবো (বোখারি)। পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে রোজা রাখা মুসলমানদের উপর ফরজ। পৃথিবীজুড়ে মুসলমানরা রোজার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কাছে নিজেদের নিবেদন করেন। তাঁদের এ আত্মনিবেদনের পেছনে থাকে না কোনো ইহলৌকিক চাওয়া। আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টিই কেবল চেয়ে থাকেন মুমিনরা। আল্লাহ তাআলাও মুমিনদের এ ভালোবাসাকে কবুল করে নিয়ে জান্নাতি প্রতিদান দিয়ে তাঁদের জীবনকে কানায় কানায় পূর্ণ করে দেন। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে, আল্লাহ তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেন। ’ (বুখারি ও মুসলিম)

রোজাদারদের সংবর্ধিত করতে জান্নাতে থাকবে একটি বিশেষ গেট। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জান্নাতে রাইয়ান নামে একটি দরজা আছে। ওই দরজা দিয়ে কেবল রোজাদাররাই প্রবেশ করবে। ঘোষণা করা হবে, রোজাদাররা কোথায়? তখন তারা উঠে দাঁড়ালে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করতে বলা হবে। তারা প্রবেশ করার পর ওই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং তা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। ’ (সহিহ বুখারি)

রোজার ব্যাপারে ইসলাম কঠোর অবস্থানে। রোজা অস্বীকারকারী কাফির। রোজা পরিত্যাগকারী ফাসেক। কেউ যদি ইচ্ছাকৃত একটি রোজাও ছেড়ে দেয়, তাহলে তাকে এর জন্য কাফফারা দিতে হবে। কাজাও আদায় করতে হবে। কেন এত কঠোরতা? কারণ রোজায় রয়েছে মানুষের জন্য প্রভূত কল্যাণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রোজা রাখো, তোমরা সুস্থ থাকবে। ’ (মুসনাদে আহমাদ)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর এই হাদিস বলে, রোজায় সুস্থ থাকার অনেক উপাদান রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, রোজা মানবদেহের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) এবং ট্রাইগ্লিসারাইড কমিয়ে নিয়ে আসে এবং ভালো (উপকারী) কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। আর এর মাধ্যমে মানুষের হার্টকে কার্ডিওভাসকুলার রোগ থেকে রক্ষা করে। রোজা শুধু আত্মসংযমের চর্চাই নয়, এটি হৃদরোগ, ব্লাড প্রেসার, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও প্রদাহ কমানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। গবেষণা বলছে, রোজা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, তবে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখা জরুরি।

রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সবকিছুর যাকাত রয়েছে। যাকাত অর্থ হচ্ছে শুদ্ধি প্রক্রিয়া, শরীরের যাকাত হচ্ছে রোজা’। ধর্মীয় গুরুত্বের পাশাপাশি রোজার শারীরিক অনেক উপকারিতাও রয়েছে। রোজা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই সুস্থ থাকতে সকলেরই রোজা রাখা উচিত। বিজ্ঞানীদের মতে, রমজান মাসে রোজা রাখলে ত্রিশ দিনের জন্য একই সময়ে দিনের ফাস্টিং উইনডো শুরু ও শেষ করতে আমরা বাধ্য হই। তাই রমজান মাসে খুব সহজেই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করা যায়। আধুনিক বিশ্বে ‘ফাস্টিং’ একটি ব্যাপক প্রচলিত শব্দ। ফাস্টিং ইংরেজি শব্দ। এর বাংলা অর্থ হলো উপবাস; অর্থাৎ খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা। বিজ্ঞানীদের মতে, ইন্টামিটেন্ট ফাস্টিং এক ধরনের ডায়েট প্ল্যান যেখানে দিনে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পেটভর্তি খাবার খেয়ে ফেলতে হবে। বাকি সময়টা উপোস করতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’-এ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, কোলেস্টেরল কমে, শরীর থাকে ঝরঝরে। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার খেলে মেটাবলিজম উন্নত হয়, ফলে শরীরে কম মাত্রায় ক্যালোরি যায়, কাজেই ওজন ঝটপট কমে।

আমেরিকার সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের (এনআইএইচ) একটি শাখা হচ্ছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন এজিং। সেখানকার প্রখ্যাত নিউরোসায়েন্টিস্ট ড. মার্ক ম্যাটসন এবং তার সহযোগীরা দীর্ঘ গবেষণা করেন ফাস্টিং নিয়ে। এরপর তারা পাবলিশ করেন এর ফলাফল। সেখানে তারা পরিষ্কার করে বলছেন যে, একজন মানুষ যদি মাঝে মাঝেই ফাস্টিং থাকে, নিজেকে সকল ধরনের খাবার এবং পানীয় থেকে বিরত রাখে, তবে তিনি তার ব্রেনের যে এজিং, সে এজিংটাকে প্রতিরোধ করতে পারবে। ব্রেনকে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে এবং বৃদ্ধ বয়সে এখন যে রোগগুলো খুব দেখা যাচ্ছে, বৃদ্ধ বয়সে এসে আমাদের স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং যেসব রোগগুলোতে স্মৃতি হারিয়ে যাচ্ছে, সেই রোগগুলোকে বলা হয় আলঝেইমারস, ডিমেনশিয়া, হান্টিংটন, পারকিনসনের মতো রোগগুলো আপনি প্রতিরোধ করতে পারবেন।

রক্ত পরিশোধন করে রোজা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের রক্তে নানা রকম বর্জ্য পদার্থ এবং ক্ষতিকর পদার্থ ঘুরে বেড়ায়। এই রক্তকে পরিশোধন করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে রোজা।

রোজা কোষ পরিষ্কার করে। আমাদের শরীরে ৩০ ট্রিলিয়ন সেল বা কোষ আছে। এই কোষের ভিতরে প্রতিনিয়ত নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তৈরি হচ্ছে বিপাকক্রিয়ার ফলে এবং নানা ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফলে। শক্তি তৈরি হচ্ছে, হরমোন তৈরি হচ্ছে, এনজাইম তৈরি হচ্ছে। এগুলো তৈরির পাশাপাশি কিছু বর্জ্য পদার্থ বা টক্সিন তৈরি হচ্ছে। এইসব বর্জ্য পদার্থ বা টক্সিন দূর করার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে ফাস্টিং বা রোজা। এটা নিয়ে গবেষণা করে ‍যিনি নোবেল প্রাইজ পান, তিনি হচ্ছেন ড. ইয়োশিনোরি ওহসুমি। তিনিসহ অন্য বিজ্ঞানীরা এটার নাম দিয়েছেন অটোফেজি। এটি (অটোফেজি) যখন ১২ ঘণ্টা থেকে ১৬ ঘণ্টা হবে, এটি চমৎকার কাজ করবে।

রোজা টাইপ টু ডায়াবেটিস রোধে সহায়ক। টাইপ টু ডায়াবেটিসের মূল কারণ হচ্ছে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। সম্প্রতি দুটো গবেষণা বলছে, টাইপ টু ডায়াবেটিস রিভার্স করতে চাইলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং করতে হবে। ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং কেউ যদি সপ্তাহে তিন দিন করেন, তবে তিনি টাইপ টু ডায়াবেটিস নিরাময় করতে সক্ষম হবেন। সেই সময় তার স্থূলতাও তার শরীর থেকে চলে যাবে।

দীর্ঘায়ু হওয়ায় সহায়তা করে রোজা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাঝে মাঝে রোজা, উপবাস বা ফাস্টিং একজন মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করে তাকে দীর্ঘজীবী করে।

রোজা বা উপবাসের সবচেয়ে শক্তিশালী বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি অটোফেজি। ১৬ ঘণ্টার আশপাশের সময়ে এটি শুরু হয়। অটোফেজি হলো এমন এক প্রক্রিয়া যার মধ্য দিয়ে কোষে থাকা মৃত বা ক্ষতিগ্রস্ত বস্তুগুলো সরিয়ে দেয় শরীর। এসব বস্তু বার্ধক্য, ক্যানসার ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ হতে পারে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, রোজায় সুষম খাবার পরিমাণমতো গ্রহণ করলেই শরীর সুস্থ থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অসুস্থতার কারণে অনেকেই হয়তো রোজা রাখতে পারেন না ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও। আবার অনেকে আছেন যারা হাইপারটেনশন, অ্যাজমা, পেপটিক আলসার কিংবা ডায়াবেটিসের মতো রোগকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে। এ ধরনের ব্যক্তিদের অনেকেই ইচ্ছা থাকার পরও রোজা রাখতে পারছেন না সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যেসব রোগ ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সে ক্ষেত্রে খুব সহজেই রোজা রাখা সম্ভব। চিকিৎসকদের মতে, এসব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা চাইলেই রোজা রাখতে পারেন। বিভিন্ন রোগের জন্য ব্যবহৃত ওষুধগুলো সময় পরিবর্তন করে নিলেই রোজা রাখার পাশাপাশি রোগ নিয়ন্ত্রণ বা নিরাময় সম্ভব।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category

© All rights reserved © 2025 Coder Boss

Design & Develop BY Coder Boss