আজ থেকে প্রায় 40 বছর আগে , 1985 সালের হিট বাংলা ছবি , মিঠুন এর “অন্যায় অবিচার” । মোটামুটি আমরা সকলেই জানি, ছবিটি বাংলাদেশ এবং ভারত এর যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল। ছবিটি শক্তি সামন্তের পরিচালনায় দুটি ভাষায় তৈরি হয়েছিল, বাংলার এবং হিন্দিতে । হিন্দিতে ছবির নাম ছিল “আর পার”। অনেকে হয়তো এটাকে ডাবিং মনে করতে পারেন, তবে ডাবিং নয় শক্তি সামন্তর প্রতিটা বাংলা ছবির মতন ছবিটি হিন্দিতেও রিশুট করা হয়েছিল। ছবিতে হিন্দি ভার্সন নায়িকার ভূমিকায় শক্তি সামন্ত দীপ্তি নাবালকে চুস করেছিলেন। কিন্তু দীপ্তি বাংলাদেশে শুট করতে চাননি তাই শক্তি সামন্ত , রোজিনা কেই হিন্দি ভার্সনে অভিনয় করিয়েছিলেন।
ছবিটি ভারত বাংলাদেশ উভয় দেশেই মুক্তি পেয়েছিল। যেহেতু যৌথ উদ্যোগে তৈরি ছবি তাই এই ছবিতে বাংলাদেশ এবং ভারতের অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী একসাথে কাজ করেছিলেন। যেমন মিঠুন, উৎপল দত্ত, রোজিনা , নুতন (বাংলাদেশ) অসিত সেন আরো দুই দেশের কলাকুশলীরাএই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
এই ছবির প্রথম নাম ছিল জোয়ার ভাটা কিন্তু উৎপল দত্ত শক্তি সাবানকে অন্যায় অবিচার নামটা সাজেস্ট করেন।
বাংলাদেশে বরিশালের কুয়াকাটা গ্রামে শুটিং চলাকালীন মিঠুন চক্রবর্তী প্রায় মরতে মরতে ফিরেছিলেন। ফুড পয়েজনিং এর জন্য তার অবস্থা খুবই খারাপ হয় গিয়েছিল। কিন্তু আশেপাশে কোন ডাক্তার না থাকায় তার অবস্থার আরো বেশি অবনতি হচ্ছিল। অনেক চেষ্টায় আড়াই মাইল যাওয়ার পর এক ডাক্তারের সন্ধান পাওয়া যায় ,তাকে নিয়ে আসা হয়। এবং সে ডাক্তারবাবু মিঠুনের অবস্থা দেখে বলেন, একে বাঁচানো উপায় আমার কাছে নেই ।
কিন্তু হ্যাঁ আমার কাছে একটা ইনজেকশন আছে যেটা দিলে হয়তো ওনার উপকার হবে কিন্তু এটি বাংলাদেশে ব্যান করা আছে। যদি আপনারা বলেন তাহলে আমি দিতে পারি, শক্তি সামন্ত কোন উপায় না দেখে লাস্টে ডাক্তারবাবুকে বলেন “ওটাই দিন আর তো কোন উপায় নেই….” শেষে ওটাই তার শরীরে পুশ করা হলো এবং খুব ভাগ্য ভালো যে ওষুধটা কাজ করেছিল। পরের দিন মিঠুন চক্রবর্তী সুস্থ হয়ে সবাইকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আমার কি হয়েছিল ? সবাই যখন সেই ঘটনার বর্ণনা দেয় শুনে অবাক !!!! “সে কি আমি তো কিছু টেরই পাইনি।”
ছবিটি 1985 সালের 18′ ই অক্টোবর পুজো রিলিজ ছিলো। কলকাতার রূপবানি , ভারতী এবং অরুণাতে মুক্তি পেয়েছিল অন্যায় অবিচার। ছবি দুর্দান্ত ভাবে চলেছিল গোল্ডেন জুবলি হয় এই ছবি। বক্স অফিসে ব্লকবাস্টার হয়। বিশেষ করে মফস্বলে এই ছবি দারুন সারা পায়। এবং একেকটা হলে প্রায় ৩০ সপ্তাহ চলে এই ছবি এবং প্রায় শো হাউসফুল যেত তাহলে বুঝতেই পারছেন …. এই ছবির জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই সমান জনপ্রিয়তার এই ছবির এখনো আছে বিশেষ করে উৎপল দত্তের মহেশ মান্নার চরিত্র যা কাল্ট চরিত্র পরিণত হয়েছে। শক্তি সামন্তের বাংলা ছবিতে উৎপল দত্তের উপস্থিতি সব সময় উজ্জ্বল। সাথে মিঠুনের ঘনশ্যামের চরিত্রে অভিনয়টিও দর্শকদের আজও মনে করায়।
#DevD || Filmy D
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.