1. admin2@dailysmtv24.com : admin :
  2. admin@dailysmtv24.com : admin :
বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

জাকাত প্রদান করতে হবে কাকে ?

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫
  • ১২ Time View
জাকাত প্রদানের মাধ্যমে সম্পদ পবিত্র, আত্মা শুদ্ধ হয় এবং জাকাত প্রদানে সম্পদে বরকত হয়।

ইসলাম ডেস্ক :

মহান আল্লাহ বিশ্বজগতের সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, লালনকর্তা ও পালনকর্তা। তিনি সমুদয় বস্তুর মালিক ও সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। সত্তা, স্বকীয়তা, গুণ, কর্ম ও ক্ষমতায় তাঁর সমপর্যায়ের কেউই নেই, তিনি লা শরিক। দৃশ্য ও অদৃশ্য জগতের সব কিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন। আল্লাহ ভালোবাসেন তাদের যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও জাকাত। আল্লাহতাআলা বলেন-‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।’-সূরা নূর : ৫৬

সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহতাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব। অন্য আয়াতে যাকাতের গুরুত্বপূর্ণ সুফল বর্ণনা করে আল্লাহ তাআলা বলেন-‘তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন, যার দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন এবং আপনি তাদের জন্য দুআ করবেন। আপনার দুআ তো তাদের জন্য চিত্ত স্বস্তিকর। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’-সূরা তাওবা : ১০৩

এছাড়া কুরআন মজীদের বিভিন্ন আয়াত থেকে পরিষ্কার জানা যায় যে, সালাত ও জাকাতের পাবন্দী ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের প্রশ্নই অবান্তর। কুরআন মজীদের বিভিন্ন আয়াতে, যেখানে খাঁটি মু’মিনের গুণ ও বৈশিষ্ট্য উল্লেখিত হয়েছে সেখানে সালাত-যাকাতের কথা এসেছে অপরিহার্যভাবে।

জাকাতের সমার্থক হিসেবে এসেছে ‘ইনফাক’ ও ‘সদাকা’। ইনফাক অর্থ আল্লাহর পথে ব্যয় করা বা আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যয় করা। সদাকা অর্থ সততা বা সত্যবাদিতা। সদাকা প্রদানের মাধ্যমে ইমানের দাবির সত্যতা ও অন্তরের সততার প্রমাণ হয়। ‘জাকাত’, ‘ইনফাক’ ও ‘সদাকাত’—এই তিন শব্দে জাকাত বিষয়টি কোরআনে করিমে রয়েছে ৮২ বার, যা সালাত বা নামাজের সংখ্যার সমান। জাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও প্রবৃদ্ধি। জাকাত প্রদানের মাধ্যমে সম্পদ পবিত্র, আত্মা শুদ্ধ হয় এবং জাকাত প্রদানে সম্পদে বরকত হয়। মুসলিম ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে সেদিন থেকে এক চান্দ্রবর্ষ (৩৫৪-৩৫৫ দিন) পূর্ণ হলে তাঁকে জাকাত প্রদান করতে হয়। এরপর তিনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকলে প্রতি চান্দ্রবর্ষে একবার জাকাত প্রদান করতে হয়। জাকাত প্রদান না করলে হালাল বা বৈধ সম্পদও হারাম মিশ্রিত হয়ে যায়। হালাল উপার্জন, হালাল সম্পদ ও হালাল খাদ্য ছাড়া নামাজ, রোজা, হজসহ কোনো ইবাদতই কবুল হয় না।

জাকাতের নিসাব হলো, সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর কোনো একটির সমমূল্যের নগদ টাকা বা ব্যবসার পণ্য। নিসাব পরিমাণ ও তদূর্ধ্ব সম্পদের মালিক তাঁর জাকাতযোগ্য সব সম্পদের জাকাত প্রতিবছর ২.৫% (চল্লিশ ভাগের এক ভাগ) হারে প্রদান করতে হয়। চান্দ্রবর্ষ ৩৫৪ বা ৩৫৫ দিনে হয়, যেহেতু সৌরবর্ষ ৩৬৫ দিনে বা ৩৬৬ দিনে হয়, তাই সৌরবর্ষ অপেক্ষা চান্দ্রবর্ষ ১০ বা ১১ দিন কম। সৌরবর্ষ হিসেবে জাকাত প্রদান করতে চাইলে শতকরা ২.৫%–এর পরিবর্তে ২.৫৮% দিতে হবে, অর্থাৎ মূল জাকাতের সঙ্গে অতিরিক্ত ১১ দিনের হিসাব যোগ করতে হবে। অনুরূপ কারও জাকাত সমাপনী হিসাব তারিখ রমজানে না হলে তিনি অতিরিক্ত সময়ের জাকাত সমন্বয় করে জাকাত হিসাব তারিখ রমজানে নিয়ে আসতে পারেন।

যেসব সম্পদে জাকাত প্রযোজ্য হয়

  • সোনা-রুপা
  • ব্যাংকে সঞ্চয়কৃত টাকা
  • ব্যাংক ব্যালেন্স, ফিক্সড ডিপোজিট, বন্ড, শেয়ার
  • হজ, ঘরবাড়ি ও বিয়ের জন্য জমানো অর্থ
  • ব্যবসার নিয়তে ক্রয়কৃত জিনিস
  • দোকানপাটের বাণিজ্যিক পণ্য
  • দোকানের বিক্রি করার জন্য রাখা পণ্য
  • ব্যবসায়িক ভূমি বা প্লট
  • বসবাস বা এমনিতে ক্রয়কৃত প্লট
  • বার্ষিক বাড়ি ভাড়া যদি সার্বিক খরচের অতিরিক্ত হয়ে জাকাতের নেসাব পরিমাণ হয়

মুদ্রা ও পণ্যের বেলায় বর্তমানে রুপার (২২ ক্যারেট বারের মূল্য) নিসাবই পরিমাপক হিসেবে গণ্য হবে। তাই যার কাছে ৫২ দশমিক ৫ তোলা (৬১২ দশমিক ১৫ গ্রাম) রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ, নগদ অর্থের সাথে স্বর্ণ, বন্ড, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, ব্যাংকে জমা করা যে কোনো ধরনের টাকা ফিক্সড ডিপোজিট হলে মূল জমা টাকা অথবা সমমূল্যের ব্যবসার পণ্য থাকলে জাকাত আদায় করতে হবে। কিন্তু কারো কাছে যদি ন্যূনতম সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণ না থাকে, কিন্তু কিছু রুপা থাকে, তাহলে তাকে হিসাব করতে হবে রুপাকে পরিমাপক ধরে। অর্থাৎ সোনা, রুপা এবং জাকাতযোগ্য সব সম্পদ মিলে যদি কমপক্ষে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার মূল্য পরিমাণ হয় বা আরও বেশি হয়, তাহলে তাকে সমুদয় সম্পদের মূল্যের ৪০ ভাগের একভাগ বা আড়াই শতাংশ জাকাত দিতে হবে।

জাকাত যাদেরকে দিতে হবে

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘জাকাত হলো কেবল ফকির, মিসকীন, জাকাত উসূলকারী ও যাদের চিত্তাকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক এবং তা দাস মুক্তির জন্যে, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে (জিহাদকারীদের জন্য) এবং মুসাফিরদের জন্যে। এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়’। [সূরা তাওবা (৯) : ৬০] এই আয়াতে জাকাতের আটটি খাত নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তা হলো; ১. ফকীর, ২. মিসকীন, ৩. আমিলীন (ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক জাকাত উসুলের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ), ৪. আলমুআল্লাফা কুলূবুহুম, ৫. আলগারিমীন (ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি), ৬. রিকাব (দাস মুক্তকরণ), ৭. ফী সাবীলিল্লাহ (আল্লাহর পথে জিহাদকারী), ৮. ইবনুস সাবীল (নিঃস্ব মুসাফির)।

যেসব জিনিসের ওপর জাকাত ফরয নয়

নিজ ও পোষ্য পরিজনের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও বাহনের ওপর যাকাত ফরয নয়।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/১৯-২০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ১০২০৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৫

গৃহের আসবাবপত্র যেমন খাট-পালঙ্ক, চেয়ার-টেবিল, ফ্রিজ, আলমারি ইত্যাদি এবং গার্হস্থ সামগ্রী যেমন হাড়ি-পাতিল, থালা-বাটি, গ্লাস ইত্যাদির উপর যাকাত ফরয নয়। তা যত উচ্চমূল্যেরই হোক না কেন।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৯৩,৭১০২; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ১০৫৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৫

তবে এক্ষেত্রে মনে রাখাতে হবে য, যেসব বস্ত্তর উপর যাকাত আসে না সেগুলোতে যদি সোনা-রুপা সংযুক্ত থাকে তাহলে অন্যান্য জাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে এই সংযুক্ত সোনা-রুপারও যাকাত ফরয হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category

© All rights reserved © 2025 Coder Boss

Design & Develop BY Coder Boss