সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে
–এস এম লুৎফর রহমান
………………………………………….
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের রয়েছে গৌরবজ্জ্বল ও দীর্ঘ ইতিহাস। সেই ইতিহাসকে ধারণ করতে হবে। বৃটিশদের দুইশত বছরের পরাধীনতার পর ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভ করে উপমহাদেশের মানুষ। ১৯৪৭ সালে মুসলিম জাতিসত্তার ভিত্তিতে আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। কিন্তু সেই স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল ভোগ করতে পারেনি বাংলাদেশের জনগণ। নাগরিক অধিকার, সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি শাসকশ্রেণি। ফলে আবার স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে হয় আমাদের। তারই ধারাবাহিকতায় আসে ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, যে নাগরিক অধিকার ও মানবিক অধিকারের জন্য একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছে, তা দীর্ঘ অর্ধশতক পার করেও অর্জন করা যায়নি। বরং আওয়ামীলীগ একাত্তরের চেতনা বিক্রি করে জনগণের অধিকার হরণ করেছে। ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। ভাতের ও ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। চাকুরির অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নিরাপত্তার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ফলে সেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ১৯২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান ছিল একটি অনিবার্য বাস্তবতা। যে বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।
সত্তরের নির্বাচনে জনগণের ভোটের ফয়সালা মেনে না নেওয়ার প্রেক্ষাপটে একাত্তর সংঘটিত হয়েছিল। একইভাবে ২০১৪, ১৮ ও ২৪ সালে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার কারণেই চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং এটা অবশ্যই আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন।
চব্বিশের এই অর্জনকে সফল করতে হবে। নাহয় আবার যদি চেতনা ব্যাবসা শুরু হয়, তাহলে শহিদের রক্ত ও জনগণের ত্যাগতিতিক্ষা ব্যর্থ হবে। বরং সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। যে বাংলাদেশে নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অধিকার নিশ্চিত হবে। যে বাংলাদেশে সন্ত্রাসের কোনো ঠাঁই থাকবে না। কোনো চাঁদাবাজের জায়গা হবে না। ভোটডাকাতের জায়গা হবে না।
একাত্তরের চেতনা বিক্রি করে আওয়ামীলীগ ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। সুতরাং চেতনা বিক্রির রাজনীতি বন্ধ করুন। বরং বাংলাদেশকে নাগরিকবান্ধব ও শ্রমিকবান্ধব রাষ্ট্র হিসেবে গড়ার রাজনীতি করুন। জনগণ সেই গড়ার রাজনীতিকে সাধুবাদ জানাবে এবং দেশবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেবে। দেশবিরোধী যেকোনো চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে শ্রমিকজনতাকে সার্বক্ষণিক সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সৎ, দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বকে জনগণ বাছাই করে নেবে, ইনশাআল্লাহ।
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, চট্টগ্রাম মহানগরীর স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এস এম লুৎফর রহমান উপর্যুক্ত কথা বলেন। নগর সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মহানগরী সহ-সভাপতি মকবুল আহম্মেদ ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক নুরুন্নবী, অফিস সম্পাদক স ম শামীম, ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, শিক্ষা ও প্রশিক্ষন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মজুমদার প্রকাশনা সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.