1. admin2@dailysmtv24.com : admin :
  2. admin@dailysmtv24.com : admin :
রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন

ধনীর দুলালের বেপরোয়া গতিতে পিষে গেল সাধারণ ঘরের নিরপরাধ যুবক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
  • Update Time : বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
  • ৪৪ Time View

অপ্রাপ্তবয়স্ক, লাইসেন্সবিহীন, একাদশ শ্রেণির ছাত্রের বেপরোয়া গতির গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে সাইকেল আরোহী ওসমান গণি মানিক নামের সমবয়সী এক গৃহকর্মীর। বুধবার (১১ জুন) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে হালিশহর থানাধীন আড়ং (সিলভার বেলস স্কুল) এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কালো পিচ ঢালা সড়ক রক্তে ভেসে যায়। মর্মান্তিক এ ঘটনা নাড়া দিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীদের। তারা গাড়িসহ ওই চালককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। সাদা রঙের হোন্ডা সিভিক প্রাইভেট কারটির নম্বরপ্লেটে লেখা ছিল চট্টমেট্রো-গ ১৪-২৮৫৬।

হালিশহর থানার এসআই তীথংকর জানান, নিহত সাইকেল আরোহীর বয়স আনুমানিক ১৯। তিনি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির পূর্ব বাইশারী এলাকার মো. নাছিরের ছেলে। হালিশহর এলাকায় জানে আলমের বাসায় কাজ করতেন।

দুর্ঘটনার সময় প্রাইভেটকারের চালকের আসনে ছিল কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রটি। প্রাইভেটকার, চালকের আসনে থাকা ছাত্র পুলিশের হাতে আটক রয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হালিশহর থানার ওসি।

স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুর রহমান সিকদার বলেন, চট্টগ্রামের সড়কে দিন দিন বেপরোয়া হচ্ছে এক শ্রেণীর ধনীর দুলালরা৷ দামি মডেলের গাড়ি নিয়ে দ্রুত গতিতে দাপিয়ে বেড়ায় সারা শহর৷ নগরীর বেশির ভাগ আবাসিক এলাকা এসব কার রেসারদের বিপদজনক ড্রাইভিং এ অতিষ্ঠ। দিন দিন নাম্বার প্লেট বিহীন বিলাস বহুল এসব গাড়ির উৎপাত বাড়ছে নগরীর অলিগলিতে। নিজেদের খেয়াল খুশি মত গাড়ি চালাতে গিয়ে পথে ঘাটে বাড়াচ্ছে দুর্ঘটনা৷ অনেক সময় অন্যান্য সাধারণ গাড়ির চালকদের সাথে বিবাদেও জড়াচ্ছে এসব বেপরোয়া কার রেসাররা।

সম্প্রতি নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন গোয়াল পাড়া বাজার সড়কে এক বিচিত্র ঘটনার মুখোমুখি হন এক সাংবাদিক৷ নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি রাতে গোয়াল পাড়া বাজারের দিকে থেকে এনায়েত বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম৷ বিপরীত দিক থেকে নাম্বার প্লেট বিহীন একটি বিলাসবহুল গাড়ি আসছিলো। সরু সড়ক হওয়ায় আমি হেড লাইটের মাধ্যমে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়িটিকে থামানো সিগন্যাল দেই। কিন্তু গাড়ি চালক এসব না মেনেই আমার গাড়ির মুখোমুখি এসে তার গাড়ি থামিয়ে নেমে আসে৷ এসে আমাকে গাড়ি পেছনে দিতে হুমকি দেয়৷ জরুরি কাজ থাকায় আমি বাধ্য হয়ে আমার গাড়ি পিছিয়ে দিয়ে সেই ঘটনা ভিডিও করতে থাকি৷ এসময় সেই গাড়ি চালক আমাকে বলেন, আমাকে ভিডিও করছেন? একটু এখানে দাঁড়ান আমি আসি এরপর দেখেন কি হয়। বোঝাই যাচ্ছিলো ছেলেটি বেশ অ্যাগ্রেসিভ। এরা আসলে সব কিছু দেখাতে পারে৷ এদের বাপের কাড়ি কাড়ি অর্থবিত্ত আছে এসব ব্যবহার করে এসব ছেলেরা কাউকে পরোয়া করে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, এসব গাড়ির বডি দেখলেই বুঝা যায় এসব কারা চালায়। ট্রাফিক আইনে সর্বোচ্চ জরিমানা এসবে উচ্চবিত্ত পরিবারের জন্য কোন ব্যাপার না৷ অনেক সময় এদের সড়কে দাঁড় করালেই শুরু হয়ে যায় নানা পর্যায় থেকে ফোন আসা৷ এখন বাবা-মা যদি সন্তানের হাতে বিলাসবহুল গাড়ি তুলে দেয়, এরপর সেই গাড়ি দুর্ঘটনা করলে টাকার জোরে রফাদফা করে ফেলে সেক্ষেত্রে পুলিশের আর কি করার থাকে৷

প্রত্যক্ষদর্শী ইকবাল মাহমুদ বলেন, বেপরোয়া গতি, বখে যাওয়া প্রভাবশালী পরিবার, আর তার চরম মূল্য দিতে হলো একটি সাধারণ ঘরের নিরপরাধ ছেলেকে! একজন ১৬/১৭ বছর বয়সের কিশোরকে এভাবে গাড়ির নিচে প্রাণ দিতে হলো কেন? এই খুনির পুরো পরিবারকে আইনের আওতায় আনা হউক।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category

© All rights reserved © 2025 Coder Boss

Design & Develop BY Coder Boss