লেখক:-সাংবাদিক নেতা শেখ তিতুমীর আকাশ:- আসুন ছোট করে যুক্তিগত ভাবে জেনে নেই সাংবাদিকতার প্রকৃতি নিয়ে আলোচনার আগে প্রথমে গণমাধ্যম বিষয়টি খোলাসা হওয়া দরকার। কারণ, বর্তমান সময়ে গণমাধ্যম কেবল সাংবাদিকতা নয়, আরও বহুবিধ কাজ করে। তারা একদিকে যেমন জনজীবনের প্রাত্যহিক ঘটনাবলি ‘ইনফর্ম’ করে, একই সঙ্গে তারা মানুষকে ‘Educate’-‘Entertain’-‘Advertise’ যা বাংলায় উর্চ্চারন এডুকেট’, ‘এন্টারটেইন’, ‘অ্যাডভারটাইজ’ ও ‘প্রোপাগান্ডা’ করে। শুধু তা-ই নয়, কিছু কিছু গণমাধ্যম পরিকল্পিত ভাবে ‘ফেক নিউজ’ বা তৈরি করা খবর প্রচার করে বলেও অভিযোগ কম নেই! এরকম অভিযোগ পুরোটাই অস্বীকার করা যাবে বলে আমারও মনে হয় না।
আমরা সবাই জানি, তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ময়কর প্রসারে সাংবাদিকতার পরিধি আজ ব্যাপক ও বিস্ময়কর ভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। তবে অনেকে এ-ও বলে থাকেন, এ সম্প্রসারণ ঘটেছে কেবলই বহিরাঙ্গে, অন্তরে বা আত্মায় নয়। হয়তো সে কারণে সাংবাদিকতার‘কমিটমেন্ট’ নিয়েও অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠে। মানতেই হবে, স্পিড, কালার, কনটেন্ট প্রভৃতির ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে গণমাধ্যমে। টিভির অনুষ্ঠান ‘লাইভ’ বা সরাসরি হচ্ছে। মোবাইল ফোন কিংবা আইপ্যাডের স্ক্রিনে সবকিছুই এখন হাতের নাগালে।
আগেকার এবং বর্তমান সময়ের সাংবাদিকতার মধ্যে বিস্তর ফারাক লক্ষ করার আছে। আগে যেখানে প্রিন্ট মিডিয়াই ছিল সাংবাদিকতার মূল বাহন, আজ সেখানে ইন্টারনেট এসে তার পরিধি বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আসলে ইতিহাস কয়জন জানি আসুন ইতিহাস গুলো আগে জানি —
যখন দেশ বিদেশে এসেছে স্যাটেলাইট টেলিভিশন। বিশ শতকে, এমনকি গত শতকের শেষার্ধেও আমাদের উপ মহাদেশীয় দেশগুলোয় টেলিভিশন সাংবাদিকতার তেমন প্রসার ঘটেনি।
সে সময়ে সাংবাদিকতা বা গণমাধ্যম ছিল নিতান্তই প্রিন্ট বা ছাপাখানানির্ভর। আমরা যদি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা ভাবি ইতিহাস ঘাটি তখন ভারত ও পাকিস্তানের সাংবাদিকতা ছিল আক্ষরিক অর্থেই প্রিন্টনির্ভর। টেলিভিশন যদিও চালু হয়েছিল, কিন্তু মোটেও বিস্তার লাভ করেনি।
আরো একটু ভিতরের ইতিহাস জেনে আসি আসুন—
দিল্লিতে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে টিভি সম্প্রচার শুরু করা হয় ১৯৫৯ সালে। ভারতে টিভির দৈনিক সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৬৫ সালে। সেদিনকার পূর্ব পাকিস্তান বা বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকায় প্রথম টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর। সে সম্প্রচার ছিল খুবই সীমিত আকারে এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণে। এরপর ১৯৯৬ সালে প্রথম স্যাটেলাইট টেলিভিশন হিসাবে এটিএন বাংলার যাত্রা শুরু হয়। তবে বেসরকারি খাতে টেরিসট্রিয়াল টিভি হিসাবে প্রথম সম্প্রচার শুরু করে ২০০০ সালে একুশে টেলিভিশন। বলা বাহুল্য, একুশে টিভি বাংলাদেশে টেলিভিশন সাংবাদিকতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। এরপর দ্রুত স্যাটেলাইট টেলিভিশনের বিকাশ ঘটে দেশে এবং গণমাধ্যমের পরিধি বিস্তারে নতুন যুগের সূচনা করে।
দেশে স্যাটেলাইট টেলিভিশনের বিকাশ ঘটার কারনে
অনেকে ভয় পান ‘অনলাইনের’ এ যুগে প্রিন্ট বা ছাপা কাগজের সংবাদপত্র কোথায় জানি হারিয়ে যায়! হারিয়েছেও কিছু কিছু। কিন্তু প্রিন্টের যে স্বাদগন্ধ আছে, তাকে অস্বীকার করা যাবে বলে আমার মনে হয় না। আমার বিশ্বাস, প্রিন্ট থাকবে এবং নিজের মর্যাদাতেই থাকবে; যেমন ইলেকট্রনিক পুস্তকের ব্যাপক প্রসারের পরও বই ছুঁয়ে দেখার আনন্দ কমেনি আজও। তবে বলতেই হবে, অধুনিক সাংবাদিকতার বেশকিছু সংকট বা সীমাবদ্ধতা আছে, যা হরহামেশাই লক্ষ করা যায়। অনেকেই অভিযোগ করেন, সাংবাদিকতা যতটা শরীরের রূপে বেড়েছে, ততটা অন্তরে বা কমিটমেন্টে’ বাড়েনি। কাজেই তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসেও আমরা সাংবাদিকতার মতন মহৎ পেশার মান বাড়াতে পারিনি এর কারন সরকারি পদক্ষেপ এসব ব্যপারে খুবই কম দেখা যায়। কিছু কিছু বিষয়ে সরকারের নীতি নৈতিকতার প্রভাবে পড়ে বড় বড় আমলাদের দাপোর্টে সাংবাদিকতার যতই মাধ্যম তাদের মর্যাদা হারাচ্ছেন। এসব বিষয় গুলো সঠিক রুপে আনতে গেলে দরকার সাংবাদিকদের একতা, যৌতিক চিন্তা চেতনা, সাহস , সবার মতাদোস এককরে সেটাকে বাস্তবতায় আনতে প্রিন্ট মিডিয়া ও স্যাটেলাইট টেলিভিশন গুলোর সকলদের এক হয়ে কাজ করা ।
#সাংবাদিক #সংবাদ #প্রিন্ট #স্যাটেলাইট #টিভি #নিউজ #ভাইরাল
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.