শ্যামসুন্দর বৈষ্ণব (১৯২৭-২০০০) ছিলেন চট্টগ্রামের কথ্য ভাষায় রচিত আঞ্চলিক গানের একজন বিখ্যাত গায়ক।
কণ্ঠশিল্পী শ্যামসুন্দর ১৯২৭ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার ফতেয়াবাদস্থ নন্দীরহাট এলাকায় সম্ভ্রান্ত এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। খুব অল্প বয়সে তার বাবা পরলোক গমন করায় পরিবারের হাল ধরার লক্ষে চাকরিতে নিয়োজিত হওয়ায় শিক্ষাজীবনে তিনি বেশিদূর যেতে পারেননি।
শ্যামসুন্দরের পিতা জয়দাশ বৈষ্ণব ছিলেন আধ্যাত্মিক গানের একনিষ্ঠ সাধক।তার হাত ধরেই শ্যামসুন্দর সংগীতাঙ্গনে প্রবেশ করেন। গান আর কৌতুক নিয়ে এলাকায় শিশুকালে সাড়া ফেলে দিয়েই আগাম জানিয়েছিলেন তিনিই হবেন সাংস্কৃতিক জগতের সফল এক নক্ষত্র। ১৯৬৩ সালে চট্টগ্রামের প্রবীণ গীতিকার ও সুরকার সৈয়দ মহিউদ্দিন (প্রকাশ মহি আল ভান্ডারী) এর কথা ও সুরে দুটি আঞ্চলিক গান পরিবেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সঙ্গীত জীবনে পর্দাপণ করেন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তালিকাভূক্ত হবার যোগ্যতা অর্জন করেন।
শ্যামসুন্দরের কিছু জনপ্রিয় গান
• ও জেডা ফইরার বাপ,
• ভানুরে ও ভানু
• ও বাস কন্ডাকাটার,
• চল আঁরা ধাই,
• আঁর বাইক্য টেয়াঁ দে,
• আঁর বউঅরে আঁই কিলাইউম,
• ভাইসাব দুম্বি আইয়েন লেলে ফুঁৎ কইছে,
• ও বেয়াইনরে কেনতে আইলেন আঙ্গোঁ বাইত,
• আন্নের বাই দাগনভূইঞা,
• দেশে গেলে কইয়েনগো ভাইজান চাটিগাঁয়ে চাকরি একখান হাইছি
শ্যামসুন্দর জীবদ্দশায় অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- বাংলাদেশ বেতার গুণীজন সংবর্ধনা, রয়েল ক্লাব অব মেট্রোপলিটন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা, শহীদ নতুন চন্দ্র সিংহ স্মৃতি পরিষদ, বাংলাদেশ উদীচী, চট্টগ্রাম শিল্পী সংস্থা, ধ্রুব পরিষদ, বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ, অবসর সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, আলাউদ্দিন ললিতকলা একাডেমি, ত্রিতরঙ্গ, ফতেপুর রুদ্র পল্লীবাসী, হাটহাজারী কণ্ঠ, সম্মিলিত বর্ষবরণ । মৃত্যুর পর ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে একুশে পদক পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
৪ ডিসেম্বর ২০০০ তিনি পরলোকগমন করেন।
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.