1. admin2@dailysmtv24.com : admin :
  2. admin@dailysmtv24.com : admin :
শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:০১ পূর্বাহ্ন

সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি কক্সবাজারের লবণ চাষীরা

আবদুল্লাহ মজুমদার
  • Update Time : সোমবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৭ Time View

এসএমটিভি প্রতিবেদক :

চাষাদের লবণ কী দামে বিক্রি করবে তা ঠিক করে দেন দালাল সিন্ডিকেট। চাষীরা নিজের লবণ বিক্রি অধিকার হারিয়েছে ৫০ বছর আগে। দালাল সিন্ডিকেট একটি দালাল প্রথা হিসেবে চালু তাদের পূর্ব পুরুষ থেকে। সে সময় নূন্যতম দালালী নিতেন।

ষোলবছর হাসিনার দুঃশাসনে সুযোগে এই সুবিধাবাদী শ্রেণি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে,স্থানীয় এমপি, চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে, মিল মালিক, লবণ ব্যবসায়ীদের সাথে আঁতাত করে, বিসিকের কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে তাদের এ অপকর্ম করে আসছে।

মহেশখালী উপজেলার সর্ব  উত্তরের উত্তর নলবিলা মৌজা এলাকায় এই দালালচক্র বেশি সক্রিয় । দালাল চক্র দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিক চাষীদের লবণের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত করে আসছিলেন এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় বিসিকের শুধু লবণের উৎপাদন হিসাবটা ছাড়া মাঠ পর্যায়ে মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে কাজ করে না। উদ্যোগ নেই চাষীদের  স্বার্থ সংরক্ষণেও। ফলে দালাল চক্র ৪০ কেজি মনের জায়গায় ৬২ কেজিতে মন বানিয়ে (স্থানীয় ভাষায় আলাই করে) চাষাদের শোষণ  করছে। প্রতি মনে ১৫০ টাকা দালালী, ৩০ টাকা বহন, দালাল চক্রের মূলহোতা মোহাম্মদ আলম, মহেশ খালীর সাহাব মিয়া পুত্র। বর্ষায় চিংড়ি ঘের শুল্ক মৌসুমে লবণ চাষ, এই লবণ চাষের মাঠগুলো তারা নিয়ন্ত্রণ করে, কক্সবাজারের উপকূলে ২ শ জনের লবণ দালাল সিন্ডিকেট, অঞ্চলভেদে সিন্ডিকেটগুলো পৃথক পৃথক এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে।

চলতি মৌসুমে জানুয়ারিতে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, টেকনাফ, কক্সবাজার সদরসহ বিভিন্ন উপকূল অঞ্চলে  লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছে। দেশের চাহিদার ৯০ ভাগ লবণের চাহিদা পূরণ করে আসছে কক্সবাজারের উপকূলে উৎপাদিত এ লবণ ।

গত মৌসুমে লবণের ন্যায্যমূল্য পেয়ে চাষিরা চলতি মৌসুমে বিশেষ আগ্রহ নিয়ে মাঠে নামেন। কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ের এসব লবণ চাষিরা পুরোপুরি জিম্মি দালাল চক্রের কাছে। তাদের দাবি, জমির মালিক ও চাষিদের দুর্বলতাকে পুঁজি করে দালাল চক্র খুলে বসেছে শোষণের দোকান। জমি বর্গা থেকে ত্রিপল কেনা এবং লবণ বিক্রি সবকিছুই দালাল চক্রের নিয়ন্ত্রণে। যা থেকে পরিত্রাণ চান প্রান্তিক লবণ চাষিরা। দালাল ছাড়া চাষিরা ক্রেতার কাছে লবণ বিক্রি সুযোগ নেই, মহেশখালী উত্তর নলবিলা মৌজার লবণ চাষী ফরিদ জানান, ৩০ বছর ধরে আলম দালাল সিন্ডিকেটের কাছে আমরা জিম্মি। এই সিন্ডিকেট জমির মালিক থেকে অগ্রিম বর্গা  নিয়ে চাষীদের জিম্মি করে রেখেছে।

বিসিকের তথ্যমতে, কক্সবাজারে চলতি মৌসুমে ৬৬ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ লাখ ১০ মেট্রিক টন। গত মৌসুমে ওই পরিমাণ জমিতে লবণ উৎপাদিত হয়েছিল ২৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন।

মহেশখালী ইউনুস খালীর লবণ মাঠের জমির মালিক এখলাছুর বলেন, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কিছু মিলমালিক সিন্ডিকেট করে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে লবণের দাম কমিয়ে দিয়েছেন । মৌসুমের শুরুতে ডিসেম্বর-জানুয়ারী  মিলমালিক ও ভ্রাম্যমান ক্রেতারা স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে প্রতি বস্তা (বস্তাতে ৮০ কেজি) লবণ ১ হাজার ৪০০ টাকায় কেনেন। দফায় দফায় দাম কমিয়ে এখন সে লবণ ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায় কেনা হচ্ছে। আবার বস্তাপ্রতি অর্থাৎ ৮০ কেজি লবণের সঙ্গে বিনা মূল্যে ১০-১৫ কেজি করে অতিরিক্ত লবণ দিতে হচ্ছে। তাতে লোকসান দিয়ে লবণ বিক্রি করতে হচ্ছে চাষিদের।

বর্তমানে প্রতি কেজি লবণ উৎপাদন করতে ১৫ টাকা খরচ হলেও লবণ বিক্রি করে চাষিরা পাচ্ছেন ৮ টাকা। লবণ দালালরা মনপ্রতি ১৩০-১৫০ টাকা দালালীসহ বহন বাবদ কেটে নেয়, প্রান্তিক চাষীদের এ লোকসান গুনতে হচ্ছে । বর্তমান লবণের দাম কমে যাওয়ায় মাঠপর্যায়ের লবণ ব্যবসায়ীরাও চরম হতাশায় ভুগছেন। গত মৌসুমে মনপ্রতি ৫শ টাকায় লবণ কিনে এবছর লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে প্রতি কেজি লবণ সাত-আট টাকায় কেনা হলেও বাজারে প্যাকেজ জাত লবণের দাম কমছে না। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ভোজ্য লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়।

কক্সবাজার বিসিক কর্মকর্তা জাফর ইকবাল ভূইয়া লবণ দালাল বিষয়ে জানান, জমির মালিক থেকে তিন চার বছরের জন্য আগাম বর্গা নিয়ে থাকে লবণ মৌসুমের সময় চাষাদের সাফ বর্গা দিয়ে থাকে। দালালশ্রেণি মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে লাভে অংক গুনে, চাষা থেকে সাফ বর্গা ও লবণ ক্রয়ে সময় লাভ করে থাকে।মিলমালিকগণ লবণ ক্রয়ের সময় দালালদের সাথে দরদাম করে, একজন চাষীর ২ বা ৩ শ লবণ মজুদ থাকে দালালদের কাছে তার সমস্থ চাষাদের কাছে কী পরিমাণ লবণ মজুদ আছে, কয়েকশ টন কয়েক ট্রাক দিতে পারে দালালরা সে কারণে লবণের বড় ব্যবসায়ীরা চাষাদের কাছে না গিয়ে দালাল সিন্ডিকেটের কাছ থেকে লবণ ক্রয় করে।

লেখক : সাংবাদিক ও সমাজকর্মী। 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category

© All rights reserved © 2025 Coder Boss

Design & Develop BY Coder Boss